কয়লার সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও উৎপাদনে ফিরছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। কয়লা সংকটে গত ১৪ জানুয়ারি থেকে একমাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) চালু হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে আসে। কয়লাবাহী আরেকটি জাহাজ ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আসার কথা রয়েছে।
রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, কয়লার সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় আমরা আগামীকাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু করতে যাচ্ছি। ৩০ হাজার টন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে এসে পৌছেছে। নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি একটি জাহাজ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়েছে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরেকটি কয়লাবাহী জাহাজ এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। কয়লা আমদানিতে এলসি জটিলতা এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে যে জাহাজটি এসেছে, সেই কয়লা দিয়ে মাত্র ৬ দিন কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালানো যাবে। কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু রাখতে দৈনিক কয়লার প্রয়োজন পাঁচ হাজার টন। পরবর্তীতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লাবাহী জাহাজটি এলে সেটি দিয়ে কেন্দ্রটি আরো ১০ দিন চালানো যাবে। ইন্দোনেশিয়া থেকে একটি জাহাজ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জেটিতে ভিড়তে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, গত ১৫ আগস্ট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। রাজধানীর বিদ্যুৎসংকট দূর করতে গত ১৭ ডিসেম্বর রাত থেকে জাতীয় গ্রিডে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। এলসি জটিলতায় কয়লা আমদানি ব্যাহত হওয়ায় কয়লা সংকটে গত ১৪ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রটিতে কয়লা মজুতের সক্ষমতা রয়েছে তিন মাসের। নিয়ম অনুযায়ী, এক মাসের কয়লা মজুত রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এতোদিন কেন্দ্রটিতে কয়লার কোনো মজুত ছিল না।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বিনিয়োগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাগেরহাটের রামপালে অবস্থিত। গেল ১৭ ডিসেম্বর থেকে এই কেন্দ্রের একটি ইউনিট জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে। এর উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। প্রতিদিন উৎপাদন করা হচ্ছিল ৫৬০ থেকে ৫৭০ মেগাওয়াট। আগামী জুনে দ্বিতীয় ইউনিটও বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
তবে কয়লা সংকটে গত ১৪ জানুয়ারি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এবার কয়লা এসে পৌঁছানোয় কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াট প্রথম ইউনিটটি উৎপাদনে যাচ্ছে।
এআরএস