এফবিসিসিআই’র মতবিনিময়, চিনির দামে ‘লা-জওয়াব’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৩, ০৮:২৯ পিএম
এফবিসিসিআই’র মতবিনিময়, চিনির দামে ‘লা-জওয়াব’

রমজানের প্রয়োজনীয় ছয়টি পণ্য পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা, ভোজ্যতেল, খেজুর ও মসুর ডালের দাম স্থিতিশীল রাখতে এফবিসিসিআই দায়িত্ব নিয়েছিল; বর্তমানে পণ্যগুলোর দাম স্থিতিশীল রয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই বোর্ড রুমে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি, মজুত, সরবরাহ, বাজার পরিস্থিতি ও বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে এ মতবিনিময় সভা হয়।

দোকান মালিক সমিতির এমন দাবির প্রেক্ষিতে সরকার নির্ধারিত ১০৭ টাকা কেজি চিনি কোথায় বিক্রি হয় জানতে চাইলে সমিতির সভাপতি কোন উত্তর না দিয়ে বিষয়টি তদারকির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর দায় চাপান। সভায় অংশ নিয়ে আমদানিকারক ও রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা জানান বর্তমানে চিনির পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ রয়েছে। অথচ বাজারে চিনির দাম নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি। এতে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটের বিষয়টি সামনে আসে। পাইকারি বিক্রেতারা দাবি করেন, মিলগুলো তাদেরকে রশিদ দেয় না, তাই তারাও রশিদ দিতে পারেন না। পরস্পর দোষারোপের মধ্যেই চিনির দাম স্বাভাবিক আছে বলে দাবি করেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি।

দাম নির্ধারনের দুই মাস হতে চললেও এটি কার্যকর না হওয়ার বিষয়ে এফবিসিআই, দোকান মালিক, রিফাইনারি ও পাইকার কেউ ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। অন্যদিকে অস্বাভাবিক বেড়ে চলা মুরগির দাম বিষয়ে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানালেও সভায় অংশ নেয়নি ‘মুরগি ব্যবসায়ীরা।’

এ সময় এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্রয়লার মুরগি এখন ২৮০ টাকা। এখন যদি সরকার মনে করে আমদানি করলে দাম কম পড়বে, তাহলে আমদানি করবে। তিনি বলেন, দুবাইয়ে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা। কিন্তু দুবাইয়ে গরু উৎপাদন হয় না। তারা আমদানি করে যদি ৫০০ টাকা দিতে পারে তাহলে আমারা উৎপাদন করে কেন এত দামে কিনব।

তিনি জানান, এখন গরু ও পোল্ট্রির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। দেশীয় এ খাত বাঁচাতে এতদিন মাংস আমদানি বন্ধ ছিল। এখন যদি তারা সঠিক মূল্যে গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগি দিতে না পারে তাহলে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলব, বাজার ঠিক রাখতে আমদানির অনুমতি দেওয়ার জন্য। আমদানি করলে যদি বাজারে দাম কমে যায়, তাহলে আমদানি করতে হবে। মানুষ যদি ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে না পারে, তাহলে ইন্ডাস্ট্রির কথা চিন্তা করে লাভ নেই।

মো. জসিম উদ্দিন জানান, এবার চাহিদার তুলনায় বেশি খেজুর আমদানি করা হয়েছে। শুধু খেজুর নয়, চিনি ও ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্যও পর্যাপ্ত রয়েছে। এবার রোজায় সরকার বাজার মনিটরিংয়ে কঠোর রয়েছে জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কোনো বাজারে বেশি মূল্য রাখা হলেই কিন্তু বাজার কমিটি বাতিল করবে সরকার। একইসঙ্গে দাম বেশি নেওয়া প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে। আমরা চাই না রোজায় দাম বেশি নেওয়ার কারণে কোনো ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল হোক বা কাউকে আটক করা হোক। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সমস্যা থাকতে পারে, তবে সমস্যাটি আমাদের জানাবেন। আশা করব, আপনারা কেউ বেশি মুনাফা করবেন না।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, এম এ মোমেন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও নিত্যপণ্যের ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতাসহ বাজার কমিটির সভাপতিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এআরএস