করমুক্ত সীমার নিচে থাকলেও আয়কর বিবরণি দাখিলে টিআইএনধারীকে আগামী অর্থবছর থেকে ২ হাজার টাকা গুনতে হতে পারে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এই প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের একজন নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধার বিপরীতে সরকারকে ন্যূনতম কর প্রদান করে সরকারের জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ।
“এ ধরনের অংশীদারিত্বমূলক অংশগ্রহণ দেশের জনসাধারণের মাঝে সঞ্চারণের লক্ষ্যে করমুক্ত সীমার নিচে রয়েছে, অথচ সরকার হতে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে-এমন সকল করদাতার ন্যূনতম কর ২ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।”
গত অর্থবছর থেকে সরকারি ৩ ডজনের বেশি সেবা গ্রহণে আয়কর বিবরণি বা রিটার্ন দাখিল সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
- পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণের জন্য আবেদন
- পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র ক্রয়
- ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ
- কোনো কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হওয়া
- ব্যবসায়িক সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ
- সন্তান বা পোষ্যের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ালেখা করা
- অস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়া।
মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা প্রায় ৮৮ লাখ, যদিও বেশির ভাগই নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করেন না। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় বর্তমান অর্থবছরে (২০২২-২৩) রিটার্ন দাখিলকারীর হার ২৫ শতাশ বেড়ে ৩২ লাখে উন্নীত হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট তিনি বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন, তাতে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ বছরে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হবে না। তবে রিটার্ন দাখিল নিয়ে প্রস্তাব কার্যকর হলে আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার নিচে হলেও ২ হাজার টাকা দিতে হবে।
বর্তমানে করমুক্ত আয় সীমা ৩ লাখ টাকা। পাশাপাশি ৬৫ বছরের বেশি বয়সী নাগরিক এবং নারীর ক্ষেত্রে সাড়ে তিন লাখ টাকা এখন করমুক্ত।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে এই সীমাও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। নারী ও ৬৫ বছরে বেশি বয়সী করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরএস