বেড়েছে সূচক লেনদেন কমেছে মূলধন

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৩, ১০:৪৭ এএম
বেড়েছে সূচক লেনদেন কমেছে মূলধন

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। একই সঙ্গে দাম বাড়ার তলিকায় নাম লিখিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এ হিসেবে বলা যায়, টানা দুই সপ্তাহ পতনের পর পুঁজিবাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ছিল। তবে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে।

প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন ৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে গেছে। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে প্রায় চার পয়েন্ট। দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ১৮ শতাংশের বেশি।

গত সপ্তাহের বেশিরভাগ কার্যদিবস অবরোধের মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশ। বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা এই অবরোধের মধ্যে বাজারের লেনদেন প্রক্রিয়া ছিল স্বাভাবিক। তবে শেয়ারের দাম বাড়া-কমার ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিষ্ঠানের চিত্র ছিল বেশি অস্থির।

এমন অস্থিরতার মধ্যে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৭৫টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৯টির। ২২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম অপরিবর্তিত থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকার পরও সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা বা দশমিক ৬৮ শতাংশ।

এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে   দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ১৩ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২১ শতাংশ। অর্থাৎ দুই সপ্তাহে ২১ দশমিক ১১ পয়েন্ট কমার পর ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ পয়েন্টের মতো বাড়ল।

প্রধান সূচক বাড়লেও অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে। গেল সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৫ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ। ইসলামী শরিয়াহভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গেল সপ্তাহে বেড়েছে ৩ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ।

প্রধান মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৩৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৮০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ১৯৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার। সে হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৪০২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকার, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এমারাল্ড অয়েলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার। ৭৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দেশবন্ধু পলিমার।

লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বিচ হ্যাচারি, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ এবং শমরিতা হাসপাতাল।

এইচআর