চলতি অর্থবছরের ১১ মাসেই ঋণ পরিশোধে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে বাংলাদেশ। যা এযাবৎকালের রেকর্ড।
বুধবার (২৬ জুন) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ তার বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের মোট পরিশোধ করেছে ৩.০৬৮ বিলিয়ন ডলার।
গত অর্থবছরের একই সময়ে সুদ ও আসল মিলিয়ে বাংলাদেশ পরিশোধ করেছিল ২.৪৬৭ বিলিয়ন ডলার, যা পুরো অর্থবছর শেষে ২.৬৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, মূলত গত অর্থবছর থেকে বৈদেশিক ঋণের আসল পরিশোধের চাপ বেড়েছে। চলতি অর্থবছর এবং আগামী অর্থবছরে আসল পরিশোধের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়বে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত সরকার আসল বাবদ পরিশোধ করেছে ১.৮ বিলিন ডলার যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১.৫৮ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে বাংলাদেশকে বাজারভিত্তিক ঋণের জন্য উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতে সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সিং রেট (এসওএফআর) বেড়েছে। বর্তমানে এসওএফআর ৫ শতাংশের বেশি যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির আগে ১ শতাংশের কম ছিল। আবার বাংলাদেশের বাজারভিত্তিক ঋণও ক্রমাগত বাড়ছে। এ কারণে বাংলাদেশকে এখন সুদ বাবদ বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসে সুদ পরিশোধ বেড়েছে ৪২ শতাংশ। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, সরকার চলতি অর্থবছরে সুদ বাবদ পরিশোধ করেছে ১.২৫ বিলিয়ন ডলার যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৮২.৮৬ মিলিয়ন ডলার।
এদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি ৩৩ শতাংশ বেড়েছে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মে পর্যন্ত সরকার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে ৭.৯২ বিলিয়ন ডলারের যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫.৯৭৪ বিলিয়ন ডলার।
উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে জুলাই থেকে মে সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এই সংস্থাটির সঙ্গে সরকার ১১ মাসে ২.৬৯ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করেছে।
এরপর জাপানের কাছ থেকে ২.০৩ বিলিয়ন ডলার এবং বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১.৪১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে সরকার।
অন্যদিকে, অর্থবছরের জুলাই থেকে মে সময়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো ৭.০২ বিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করেছে যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬.৯৮ বিলিয়ন ডলার।
১১ মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে জাপান। এই দেশ থেকে ছাড় হয়েছে ১.৮ বিলিয়ন ডলার। এডিবি ১.৫৯ বিলিয়ন ডলার এবং বিশ্বব্যাংক ছাড় করেছে ১.৪ বিলিয়ন ডলার।
বিআরইউ