‘লুট হওয়া টাকার শূন্যস্থান পূরণে ২ লাখ কোটি টাকা লাগবে’

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ১২:০৫ এএম
‘লুট হওয়া টাকার শূন্যস্থান পূরণে ২ লাখ কোটি টাকা লাগবে’

ব্যাংক খাত থেকে পাচার ও লুট হওয়া টাকার শূন্যস্থান পূরণ করতে কমপক্ষে দুই লাখ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

বলেছেন, পাচারকারীদের দেশে থাকা সম্পদ উদ্ধারের পাশাপাশি বিদেশে থাকা সম্পদ ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, আমরা নতুন টাকা ছাপিয়ে আর কোনো ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেব না। কারণ আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে গেলে এখন ২ লাখ কোটি টাকা ছাপিয়ে দিতে হবে। এতে দেশের মুদ্রা বাজার, বিদেশি মুদ্রা বাজার, মূল্যস্ফীতিসহ সব কিছুই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এজন্য সংকটে থাকা ৮ ব্যাংকের প্রয়োজন অনুযায়ী আন্তঃব্যাংকের মাধ্যমে অর্থাৎ এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে টাকা আমানত হিসেবে পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা (গ্যারান্টি) দেবে। আশা করি এটা কাজে দেবে।

তিনি বলেন, আপাতত এসব ব্যাংক কোনো ধরনের ঋণ বিতরণ করবে না। শুধু আমানতকারীদের কিছু কিছু টাকা ফেরত দেবে। তবে এতে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমরা আমানতকারীদের অধিকার সংরক্ষণ করব। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা সময় দিতে হবে।

দেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচারকারীর দেশের মধ্যে থাকা সম্পদ উদ্ধার করব। প্রথমে আমরা এ উদ্যোগটি নেব। পাশাপাশি বাইরের দেশের পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার বিষয়েও সহায়তা চেয়েছি কয়েকটি দেশের কাছে। বাইরের টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে উচ্চ আশা করব না, তবে শক্তভাবেই আমরা ধরব।

গভর্নর বলেন, পাচারকারী একটি পরিবার ব্রিটেনে ৫০০ থেকে ৬০০ বাড়ি কিনেছেন বলে শুনেছি। সে বিষয়ে আমরা আরও বিস্তর কাজ করছি। এছাড়া যারা ব্যাংক লুট করেছে আমরা তাদের দেশে থাকা সম্পদ থেকে দায় শোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এরপর তাদের বিদেশি সম্পদে আমরা হাত দেব।

‘যতদিন উচ্চ মূল্যফীতি থাকবে ততদিন নীতি সুদহার বাড়তি থাকবে। সুদহার কমবে না, নিয়ন্ত্রণে থাকবে ঋণ প্রবাহ। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে গোপনীয় কোনো সুদ বা চার্জ থাকবে না’—যোগ করেন তিনি।

এদিকে বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)-এর চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব সংস্কারমূলক কার্যক্রম নিয়েছেন, এগুলো চালিয়ে রাখার পাশাপাশি আরও গতিশীল করতে তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এগুলো হলো—খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক, বাংলাদেশ ব্যাংক স্ট্রেংথদেনিং কার্যক্রম ও লিগ্যাল কার্যক্রম।

তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে অতীতে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছু ব্যাংককে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হতো; ব্যাংক বুঝে আইন প্রয়োগ হতো। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নতুন গভর্নর সব ব্যাংকে একই আইন প্রয়োগ করবেন। যাতে কোনো ব্যাংক বেশি সুবিধা না পায়। আবার কোনো ব্যাংক অবহেলিত না থাকে।

ইএইচ