সিরিয়ায় দীর্ঘ সময়ের শাসক বাশার আল আসাদের পতনকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় আজ সোমবার বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। বার্তা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আগামী বছর তেলের চাহিদা খুব একটা বাড়বে না, এমন পূর্বাভাস থাকায় তেলের দাম খুব বেশি বাড়েনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরবর্তীতে সরবরাহ করা হবে- এমন ব্রেন্ট ধরনের অপরিশোধিত তেলের দাম ৩৬ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে ৭১ ডলার ৪৮ সেন্টে উঠেছে। অন্যদিকে, বিশ্ববাজারের আরেকটি প্রধান ব্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) ব্যারেলপ্রতি ৩৮ সেন্ট বেড়েছে বা শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। এই ধরনের তেলের দাম উঠেছে ৬৭ ডলার ৫৮ সেন্টে।
এর আগে গতকাল রোববার সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ঘোষণা দিয়েছেন, তারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছেন। এর ফলে ৫৩ বছরের পারিবারিক শাসনের অবসান হয়েছে। তবে যতটা দ্রুতগতিতে বিদ্রোহীরা তাদের অভিযান পরিচালনা করেছেন, তাতে এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য আগে থেকেই যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে।
মিতসুবিশি ইউএফজে রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটিংয়ের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ তোমোমিচি আকুতা বলেন, সিরিয়ার ঘটনাবলি মধ্যপ্রাচ্যের অনিশ্চয়তায় আরও একটি স্তর যোগ করেছে। এতে বাজার কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহে সৌদি আরবের তেলের দাম কমানো এবং তেলের উৎপাদন কমাতে ওপেক প্লাস জোটের সিদ্ধান্ত এটাই দেখাচ্ছে যে চীনে তেলের চাহিদা দুর্বল থাকবে। ফলে বছর শেষে বাজার আর বাড়বে না।
তোমোমিচি আকুতা আরও বলেন, তেলের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জ্বালানি ও মধ্যপ্রাচ্য নীতির প্রভাব কী হয়, সে ব্যাপারে আগাম কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায় কি না, বিনিয়োগকারীরা মূলত সেদিকে তাকিয়ে আছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক কোম্পানি সৌদি আরামকো এশিয়ার ক্রেতাদের জন্য আগামী মাসে সরবরাহ করা হবে, এমন তেলের দাম কমিয়েছে। ২০২১ সালের শুরুর দিকের পর দাম এতটা আর কখনোই কমানো হয়নি। এর মূল কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ চীনে তেলের চাহিদা অনেকটাই কমেছে।
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ও তাদের সহযোগীরা ওপেক প্লাস হিসেবে পরিচিত। গত বৃহস্পতিবার এই জোট সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তেলের উৎপাদন বাড়ানোর যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা আরও তিন মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ আগামী এপ্রিলের আগে তেলের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা ওপেক প্লাসের নেই। বিশ্বের তেল উৎপাদনের অর্ধেক আসে ওপেক প্লাস দেশগুলোর কাছ থেকে।
আরএস