শাবিপ্রবির কিলোরোডের ওয়াকওয়ে যেন ‘ছায়ায় ঘেরা লাল সবুজের প্রতিচ্ছবি’

তানভীর হাসান, শাবিপ্রবি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২, ০২:৩৫ পিএম
শাবিপ্রবির কিলোরোডের ওয়াকওয়ে যেন ‘ছায়ায় ঘেরা লাল সবুজের প্রতিচ্ছবি’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) কিলোরোডের পাশে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াক ওয়ে। ইতোমধ্যেই ওয়াকওয়েটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বাহিরে থেকে আসা দর্শনার্থীদেরও নজর কেড়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হবে।

ওয়াক ওয়ের দু-পাশে রয়েছে সারি সারি মেহগনি, কড়ই ও জারুল ফুলের গাছ এবং তার পাশেই রয়েছে দৃষ্টিনন্দন লেক। যেখানে ছুটে বেড়াচ্ছে হরেক রকম মাছের ঝাঁক। যা ওয়াক ওয়ের সৌন্দর্য আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গাছের ডালে মোড়ানো ওয়াক ওয়েটি যেন ছায়ায় ঘেরা লাল সবুজের প্রতিচ্ছবি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, করোনাকালীন সময় থেকে ওয়াকওয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ওয়াকওয়েটি সবার জন্য উন্মক্ত করা হবে। আপাতত রাস্তার একদিকেই ওয়াকওয়েটি নির্মাণ করা হচ্ছে। দুটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ওয়াকওয়েটি নির্মাণের জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়। সর্বমোট ২৫শ ফিট ওয়াক ওয়ের নির্মাণ কাজের ব্যায় ধরা হয়েছে, ২ কোটি ১৮ লাখ ৪ হাজার টাকা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদা আফরোজ বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষার অন্যতম বাতিঘর এই ক্যাম্পাসটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে রয়েছে সবুজের সমারোহ। হাজারো শিক্ষার্থীর প্রাণের এই বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার দিক দিয়ে যেমন সেরা তেমনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিচারেও অতুলনীয়।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বহুগুন বাড়িয়ে তুলতে প্রতিবছরেই নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। ওয়াক ওয়েটির দুপাশে সবুজাভ গাছের ফাঁকেফাঁকে নির্মাণাধীন লাল রঙের ওয়াকওয়ে যেন বাংলাদেশের পতাকারই প্রতিনিধিত্ব করছে। সবুজেঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের এই ওয়াকওয়ে নজর কেড়েছে সবার।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিন আলম রাজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা অপরূপ সৌন্দর্যের এক কিলোর রাস্তায় হাঁটতে স্বচ্ছন্দবোধ করি। ওয়াক ওয়ে নিমার্ণ হওয়াতে সবুজে ঘেরা এক কিলো রাস্তা আরও দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠছে যা আমাদের নজর কেড়েছে। সবুজের মাঝে লাল রংয়ের ওয়াকওয়ে এককিলোকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নে সকলের অবদানের পাশাপাশি প্রকৌশল দপ্তর নিরসলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যে প্রজেক্ট গুলো হাতে নেয়া হয়েছে সেসবের কাজ শেষ হলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরোও বৃদ্ধি পাবে। ওয়াকওয়ের কাজটিও সেসবের অর্ন্তভুক্ত। আশাকরি খুব দ্রুত এই প্রজেক্টের কাজ শেষ হবে এবং সকলের জন্য প্রশাসন তা উন্মুক্ত করবেন।  

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে ওয়াকওয়েটি দরকার ছিল। কারণ বর্ষাকালে ছেলে মেয়েরা যখন হেটে যায় তখন রাস্তায় অনেকসময় পানি জমে থাকে। তার পাশ দিয়ে কোনো গাড়ি গেলে অনেকসময় কাঁদাপানি কাপড়ে লেগে যায়। এ জন্য আমরা একটি ডিজিটাল সার্ভে করে গাছের সারির মধ্যে দিয়ে ওয়াকওয়েটি করার পরিকল্পনা করি। যাতে কোনো গাছেরও ক্ষতি না হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ওয়াকওয়ের একপাশে রেলিং দেয়া হয়েছে। যাতে পাশের লেকে পড়ে তারা কোনো দূর্ঘটনার শিকার না হয়। এছাড়াও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীদের কথা চিন্তা করে র‌্যাম্প (ঢালু সিঁড়ি) করে দিয়েছি। যাতে তারা হুইল চেয়ার দিয়ে সহজে এতে উঠে যেতে পারে।

এআই