ঢাকা আলিয়ায় খতমে বুখারীর দোয়া ও সবক অনুষ্ঠিত

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২২, ০৯:১৮ পিএম
ঢাকা আলিয়ায় খতমে বুখারীর দোয়া ও সবক অনুষ্ঠিত

উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি মাদ্রাসা-ই আলিয়া ঢাকায় হাদীস শাস্ত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ বুখারী শরীফের খতমে বুখারী উপলক্ষে সেমিনার,আলোচনা সভা, দোয়া ও সবক প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসা অডিটোরিয়ামে আল হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তত্ত্বাবধানে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অত্র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ।

আল হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব হারুন উর রশিদের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অত্র প্রতিষ্ঠানের সাবেক হেড মাওলানা প্রফেসর মাওলানা মোঃ কসিম উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি শায়খুল হাদীস আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা হাদীস শাস্ত্রের অন্যতম গ্রন্থ বুখারী শরীফের নানা দিক তুলে ধরেন এবং ইমাম বুখারী জীবনী সম্পর্কে নানা বিষয় আলোচনা করেন।তারা বলেন, ইমাম বুখারীর জীবনের শ্রেষ্ঠতম কর্ম হচ্ছে সহিহ বুখারী রচনা।ইমাম বুখারী তার হাদীস গ্রন্থ বুখারী শরীফের সংকলনকালে সর্বদা রোজা রাখতেন এবং প্রতিটি হাদীস গ্রন্থ সন্নিবেশিত করার আগে গোসল করে দু‍‍` রাকাত নফল নামাজ আদায় করে মুরাকাবা ও ধ্যানের মাধ্যমে হাদীসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতেন।তিনি তার গ্রন্থে সহিহ হাদিস ব্যতীত অন্যকোন হাদিস উল্লেখ করেননি।তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর নিরলস সাধনা করে এ প্রসিদ্ধ গ্রন্থখানি রচনা করেন।যা পুরো মুসলিম বিশ্বের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ হাদীস গ্রন্থ।

অনুষ্ঠানে ছাত্রদের পক্ষ থেকে কামিলের শিক্ষার্থী মুরাদ হোসাইন ঢাকা আলিয়ার ইতিহাস তুলে ধরে বলেন,পলাশি যুদ্ধে নবাব সিরাজুদ্দোলার পরাজয়ের পর উপমহাদেশে মুসলমানদের কথা চিন্তা করে বাংলার তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৮০ সালে এটি কলকতায় প্রতিষ্ঠা করেন। তখন এটি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা নামে পরিচিত ছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত বিভক্তির সময় এটি কলকাতা থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়। বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হবার পর এর নামকরণ করা হয় মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান ১৯৫৮ সালে ঢাকার বকশীবাজারে এ মাদ্রাসার চারতলা ভবন ও ছাত্রাবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।এ মাদ্রাসায় প্রতিষ্ঠার প্রথম ২৬ জনই ছিলেন ইউরোপীয় খৃস্টান অধ্যক্ষ। ১৯২৭ সালে খাজা কামাল উদ্দীন আহমদ মুসলিম ব্যক্তি হিসেবে সর্বপ্রথম অধ্যক্ষের পদ অলংকৃত করেন।বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হবার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা শিক্ষায় সারা দেশে তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন, আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজালাল, দাওয়া বিভাগের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান, আল কুরআন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মাসুম বিল্লাহ সহ বিভিন্ন আলোচক বৃন্দ।

এছাড়াও ইমাম বুখারীর রহ. এর উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তাফসির বিভাগের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন৷অনুষ্ঠানে হাদীসের ছাত্রদের বুখারীর ছবক প্রদান করেন প্রফেসর মাওলানা মোহাম্মদ কসিম উদ্দীন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা আলিয়া সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আবু নোমান রুমি,সাধারন সম্পাদক রাকির মোরতাজা,সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান,অর্থ সম্পাদক মো.জুবায়ের,সদস্য ইমরানুল হক সাকিব, ছাত্রনেতা আজিজুল হক জুবায়ের, মুরাদ হোসেন, আজিম উদ্দিন আল আজাদ,জুবায়ের খান,সাদ্দাম হোসেনসহ মাদ্রাসার অসংখ্য শিক্ষার্থী।

এবি