বাংলা বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষা চলাকালীন কানসহ মুখমণ্ডল খোলা রাখার প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচির পরে এই স্মারকলিপি ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড মো আখতারুজ্জামানের কাছে প্রেরণ করেন বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত নারী শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ভিসি বরাবর ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
এসময় প্রতিবাদী নারী শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন প্রকৃত মুসলিম নারীরা কখনো তাদের চেহারা কাউকে দেখায় না। আমাদের এক বোনের সাথে যে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে তা নয়। অনেকের সাথে এ ধরনের ঘটে। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করে না। এর মধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
তারা আরও বলেন, এটি হিজাব বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু নয়। বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। ঢাবি একটি প্রগতিশীল বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ধর্মের স্বাধীনতা কেন থাকবে না? এর কারণে মুসলিম নারীরা ঝরে পড়বে। তাই আমরা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
এসময় ভিসি অধ্যাপক ড মো আখতারুজ্জামান বলেন, আমি বাংলা বিভাগ কর্তৃক এমন প্রজ্ঞাপনের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবে তোমাদের মতের সমর্থন জানাই। আমিও চাই না এই প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কারো অধিকার ক্ষুন্ন হোক। কোনো ধর্মের উপর আঘাত করা হোক। সবার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে ধর্মীয় চর্চা করার, স্বাধীন মতো পোষাক পরিধান করার।
তিনি ছাত্রীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমি ২৮ তারিখ পরীক্ষা শুরুর আগেই বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে এই বিষয়ের নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবো।
চলমান ইস্যুতে নারী শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি-
১.বাংলা বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষা চলাকালীন কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখা সংক্রান্ত নোটিশ বাতিল করতে হবে।
২.পরিচয় শনাক্তকরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় পরীক্ষার পূর্বেই নারী কর্মচারী কিংবা নারী শিক্ষিকার মাধ্যমে আলাদা রুমে হিজাব ও নিকাব পরিহিতাদের পরিচয় শনাক্ত করার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৩. দ্রুততম সময়ে সকল অনুষদের সকল বিভাগে হিজাব-নিকাব পরিধানকারী শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্থা করা বন্ধে নোটিশ প্রদান করতে হবে।
৪. বিভিন্ন সময়ে ক্লাসরুমে, ভাইবা বোর্ডে অথবা পরীক্ষার হলে নিকাব খুলতে বাধ্য করা অথবা কটূক্তির মাধ্যমে নারী শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করার মতো ঘটনাগুলো তদন্তপূর্বক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. হিজাব বা নিকাব পরিধানে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বিধিতে ধারা যুক্ত করতে হবে এবং ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত ঘটনায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় ফিরিয়ে এনে অথবা ভিন্ন উপায়ে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
কেএস