ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেক্রেটারি গ্রুপের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অনেকেই।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। রাত ১২টার পরেও হলে প্রবেশ করতে পারেনি রওনক-তাপসী গ্রুপের মেয়েরা। তীব্র শীতেও গেস্টরুমে বসে বা বাইরে দাঁড়িয়ে সময় পার করেছেন তারা।
সরজমিনে জানা যায়, গতকাল ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যাবার আগে তাপসী ও রওনককে হুমকি দেয়া হয় যে, ছাত্রীদের নিয়ে প্রোগ্রামে গেলে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেয়া হবে। হুমকি উপেক্ষা করে রওনক ও তাপসী সাধারণ ছাত্রীদের নিয়ে প্রোগ্রামে গেলে ঘটনার সূত্রপাত। প্রোগ্রাম থেকে হলে ফেরার পর রাখি-সানজিদা গ্রুপ রওনক-তাপসী গ্রুপের উপর হামলা করে। এতে আহত হয় অন্তত তিন ছাত্রী। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্রী তিশা (ছদ্মনাম)।
এ ব্যাপারে উপ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক তানিয়া আক্তার তাপসী বলেন, তারা (রাখি-সানজিদা ) চায়নি আমি আজকের প্রোগ্রামে আমার কর্মীদের নিয়ে যাই। এজন্য আমাকে এবং আমার কর্মীদের কোনো শাড়িও দেয়নি তারা। তবুও আমি কয়েকজনকে নিয়ে প্রোগ্রামে যাই। কিন্তু আমি আর হলে ফিরতে পারিনি। আমি হলে প্রবেশের সাথে সাথেই আমাদের উপির তারা হামলা করে। এতে আমরা ১০/১২ জন আহত হই। এখনো আমরা হলে প্রবেশ করতে পারিনি, বাইরে অপেক্ষা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাপসী গ্রুপের একাধিক ছাত্রী বলেন, সেই সন্ধ্যা থেকে আমাদের হলে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। আমাদের হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। আমাদের মেরে আহত করা হয়েছে। আমরা আতংকে আছি, বাড়িতেও জানাতে পারছি না।
সানজিদা গ্রুপের এক ছাত্রী জানান, আমাদের জোর করে মারামারি করতে বাধ্য করা হয়েছে। তারাও আমাদের উপর হামলা করেছে। আমাদের গ্রুপের একজন আহত হয়েছে।
বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি সেক্রেটারি তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমরা এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কামনা করি না। আমরা আগেও মিটিং করেছি, এখন হল প্রাধ্যক্ষকে নিয়ে আবার মিটিং করে সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবো। ছাত্রীরা বাইরে অপেক্ষা করছে, যতক্ষণ না সমাধান হয় আমিও তাদের সাথে বাইরে অপেক্ষা করবো।
এ বিষয়ে প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা ছিল। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। হল প্রশাসন বিষয়টি দেখছে। আশা করি, সুষ্ঠু একটা সমাধান হবে।’
এ বিষয়ে জানতে কোহিনূর আক্তার রাঁখি ও সানজিদা ইয়াসমিনের ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি।
হলের সদ্য সাবেক সভাপতি কোহিনূর আক্তার রাখি- সেক্রেটারি সানজিদা ইয়াসমিন অন্যপক্ষে সাবেক সেক্রেটারি রওনক জাহান রাইন-তাপসীর গ্রুপের মাঝে পূর্বের বিরোধ ছিলো। সাবেক সেক্রেটারি রওনকের অনুসারী তানিয়া আক্তার তাপসী কমিটিতে বড় কোনো পদে না থেকেও কোরাম পরিচালনা করতো। কিন্তু কোহিনূর আক্তার রাখি ও সানজিদা ইয়াসমিন সেটা মানতে পারছিলো না। এ নিয়েই আজকের উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কেএস