বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল: আগে সবাই পাস, পরে ফেল!

জয়পুরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৩, ১১:৪১ এএম
বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল: আগে সবাই পাস, পরে ফেল!

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫ম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের কিছুক্ষণ পরই ফলাফল স্থগিত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সফটওয়্যারের টেকনিক্যাল কোডিংয়ে ভুল হওয়ায় সার্বিক সমস্যার কারণে স্থগিত করা হয় ওই ফলাফল।

বুধবার (১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার পর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফলে বৃত্তির সংখ্যা ঠিক থাকলেও জয়পুরহাট আক্কেলপুর উপজেলার এক স্কুলের তিনজন শিক্ষার্থী প্রথমে প্রকাশিত ফলে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেলেও সংশোধিত ফলে তালিকায় তাদের রোল আসেনি। সংশোধিত ফলাফলে তাদের রোল না পাওয়া স্কুলটি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রোয়াইড় সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয়।
১৫ বছর আগে বিদ্যালয়টিতে মাত্র একজন শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। এরপর বিদ্যালয় থেকে কোনো শিক্ষার্থী আর বৃত্তি পায়নি।

রোয়াইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে বিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছিল। এরপর কোনো শিক্ষার্থী আর বৃত্তি পায়নি। এবার বিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। বৃত্তি পরীক্ষার প্রথম প্রকাশিত ফলাফলে সাধারণ গ্রেডে ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর রোল ছিল। এই রোল নম্বরগুলো যথাক্রমে আব্দুল্লাহ আল জিসান, সাখাওয়াত হোসাইন সৌরভ ও আমিন শিকদারের। দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষার্থী সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পাওয়ায় গ্রামবাসী, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা সবাই খুশি হয়েছিলেন। ফলাফল প্রকাশের পর অভিভাবকরা আনন্দে মিষ্টিও বিতরণ করেন। তবে চার ঘণ্টা পর ফল স্থগিত করা হয় তাদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়। বুধবার রাতে প্রকাশিত সংশোধিত ফলেও তাদের রোল আসবে ধারণা করা হলেও সেই ফলাফলে তিনজনের কারও রোল নম্বর নেই।

শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল জিসানের বাবা আব্দুল করিম বলেন, আমার ছেলের প্রথম প্রকাশিত ফলাফলে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পাওয়ার পর অনেক খুশি হয়ে মিষ্টি বিতরণ করেছিলাম। কিন্তু সংশোধিত ফলাফলে রোল নাম্বার না আসায় সে সারারাত কান্নাকাটি করেছে। এছাড়াও অন্য দুই শিক্ষার্থীরও সংশোধিত ফলাফলে নাম আসেনি।

অন্য দুই শিক্ষার্থী হোসাইন সৌরভ ও আমিন শিকদারের অবিভাবকরা বলেন, খাতা পুনঃমূল্যায়ন করে পুনরায় ফলাফল প্রকাশ করা হোক। আমাদের সন্তানরা এ বয়সে এমন মানসিক চাপ মেনে নিতে পারছে না।

রোয়াইড় গ্রামের বাসিন্দা রেজায়ুল সিকদার বলেন, দীর্ঘদিন পর আমাদের বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বৃত্তি পাওয়ায় আমরা সবাই খুশি হয়েছিলাম। সংশোধিত ফলাফলে জানলাম তিনজনের কারও তালিকায় নাম নেই। আমরা খুব কষ্ট পেয়েছি।

রোয়াইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার স্থগিতকৃত ফলাফলের প্রথম তালিকায় আমাদের বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর রোল নম্বর সাধারণ গ্রেডে ছিল। বুধবার রাতে প্রকাশিত সংশোধিত ফলাফলের তালিকায় ওই রোল নম্বরগুলো নেই।

জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত তালিকা প্রকাশ হয়েছে। কে বাদ পড়ল কে যোগ হয়েছে তা নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত আপাতত কিছু বলতে পারছি না।

এআরএস