বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে জনস্বার্থে এবং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য সতর্ক বার্তা দিয়েছে। ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে। ইউজিসি বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সরকার ও ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ার জন্য ইউজিসির ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অবৈধ ক্যাম্পাস ও অবৈধভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলো, ইবাইম ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা। তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপারে ইউজিসি জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রমের আর কোন ভিত্তি নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস ও ঠিকানা এবং চ্যান্সেলর কর্তক নিয়োগকৃত ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই বা বৈধ কোন কর্র্তৃপক্ষ নেই। ফলে ২০১০ এর আইন অনুযায়ী, উক্ত ক্যাম্পাস গুলোর একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা ও উহার ফলাফল এবং প্রদত্ত একাডেমিক সনদের আইনগত কোন বৈধতা নেই।
এরপর কমিশন কর্তৃক পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত আগের চারটিসহ আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। যেমন, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি। এর মধ্য ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এক গুচ্ছ সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। বাকী চারটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব স্টাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ¦ এবং আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এগুলো হল, ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (কুমিল্লা), সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ঢাকা)।
সর্বশেষ, উপাচার্য নেই এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে সতর্ক করেছে ইউজিসি। বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অর্জিত ডিগ্রির মূল সার্টিফিকেট-এ স্বাক্ষরকারী হবেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বা আচার্য কর্তৃক নিয়োগকৃত ভাইস চ্যান্সেলর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ১০২ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তক নিয়োগকৃত ভিসি রয়েছেন ৭০ বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থাৎ ৩২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য ইউজিসির ওয়েবসাইটে দেয়া আছে।
এ ব্যাপারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্বে থাকা বিশ্বজিৎ চন্দ্র বলেন, অভিভাবকদের সতর্ক করার জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। অনেক সময় অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা যাচাই না করে এমন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষামান দুর্বল। ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের অগ্রগতি দেখলে পুনরায় তাদের অনুমতি মিলতে পারে।
এআরএস