যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা মোতাবেক দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে যবিপ্রবি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একই সাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লোগান হলো `আমরা চাকরি চাই না, আমরা চাকরি দেব`।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা হলেন মানুষ গড়ার কারিগর, এ কারিগররা যত উন্নত হবেন, তারা তত ভালো প্রডাক্ট বানাতে পারবেন অর্থাৎ দেশের জন্য তারা দক্ষ ও মানসম্মত নাগরিক তৈরি করতে পারবেন।
বুধবার (৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত `ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংকেজ` শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে বক্তারা কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবোরেশান এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনে কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সুইচ কন্টাক্টের অধীনে যশোরের লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও যবিপ্রবির আইপিই বিভাগের মধ্যে চলমান সম্মিলিত কার্যক্রম উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। আইপিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোর্সের বিষয়গুলো যশোরের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে গিয়ে হাতে কলমে শিখে এবং বইয়ের পড়া বিষয়গুলোর প্রয়োগের অভিজ্ঞতা অর্জন করে কিভাবে উপকৃত হচ্ছে তা উপস্থাপন করেন।
সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া উন্নত বিশ্বে অনেক পুরোনো হলেও আমাদের দেশের জন্য এটা একটা নতুন ধারণা। বর্তমান মার্কেটের উপর নির্ভর করে আমাদের কারিকুলাম যদি এগিয়ে না নিতে পারি, তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতি সামনের দিকে আগাবে না। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ডাস্ট্রির যদি এক সাথে সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ডাস্ট্রি দুটিই উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা মোতাবেক দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে যবিপ্রবি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একইসাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লোগান হলো `আমরা চাকরি চাই না, আমরা চাকরি দেব`।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় একটা দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ক্ষুদ্র শিল্প মুল ভিত্তি। সুইস কন্টাক্টকে এধরণের প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার জন্য তিনি তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ড দূতাবাস, বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি ও সুইচ কন্টাক্ট বাংলাদেশের সিনিয়র ম্যানেজার মেহজাবিন আহমেদ বলেন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে যারা কাজ করছেন তাদের কারিগরি জ্ঞান অনেক ভালো যেটা তারা হাতে কলমে শিখেছেন, একই সময়ে যরা বিশ্ববিদ্যালয়ে টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে পড়ছে তাদের বইয়ের জ্ঞান থাকলেও হাতে কলমে জ্ঞান কম। যদি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও একাডেমি এদের মধ্যে লিংকেজ করা যায় তাহলে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ও উপকৃত হতে পারবে। এর ধারাবাহিকতায় আইপিই বিভাগের ৯ টি কোর্সের অনুমোদন নেয়া হয়েছে, যেখানে ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়া এর লিংকেজ থাকবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও যবিপ্রবির আইপিই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এএসএম মুজাহিদুল হক, যশোর মিউনিসিপালিটি`র মেয়র মো. হায়দার গণি খান, সুইচ কন্টাক্ট, বাংলাদেশের সিনিয়র ম্যানেজার মেহজাবিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি এর পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুল হাসান, যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র শেখ মোকসিমুল বারী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইপিই বিভাগের লেকচারার শোয়েব মোহাম্মদ।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি, যশোর এর সভাপতি মোহাম্মদ আলী সহ আইপিই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে যবিপ্রবির আইপিই বিভাগ এবং বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি, যশোর শাখা এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়। তাঁর অংশ হিসেবে যবিপ্রবির আইপিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা যশোরের ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ গুলোতে ব্যবহারিক ক্লাস এবং হাতে কলমে কাজ করার সুযোগ পান।
এমএইচআর