‘জেগে উঠুক বাঙালি সত্ত্বা’

আব্দুল কাইয়ুম প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২৩, ১০:৩৬ এএম
‘জেগে উঠুক বাঙালি সত্ত্বা’

বাঙালির জীবনে উৎসবের রং ছড়িয়ে বছর ঘুরে আবার এল পয়লা বৈশাখ। বাঙালির কন্ঠে ছড়িয়ে যাবে বাংলা নতুন বছরকে সম্ভাষণ জানিয়ে রচিত রবি ঠাকুরের সঙ্গীতের সেই চেনা সুর ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো। নববর্ষ মানেই সকালে পান্তা-ইলিশ আর বাঙালি সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ। পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা নতুন বছরকে ঘিরে রয়েছে নতুন নতুন পরিকল্পনা আর আয়োজন, তেমনি রয়েছে অসংখ্য স্মৃতি। নববর্ষকে ঘিরে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ছোটবেলার স্মৃতি, আকাঙ্ক্ষা আর প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ হোসেন।

 

জেগে উঠুক আমাদের বাঙালি সত্ত্বা
বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় নানবিধ আয়োজন, কিন্তু গ্রাম বাংলার প্রানের ছোঁয়াটাই যেন অনুপস্থিত। তাই শিকড়ের সঙ্গে আত্মার যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করাই হোক আমাদের এবারের নববর্ষের লক্ষ্য, নববর্ষের নব আহ্বানে জেগে উঠুক আমাদের বাঙালি সত্ত্বা।

শাকিল খান
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা


তরুণদের সারাবছরের অপেক্ষার উৎসব

নতুন বছরকে বরণ করে নিতে তরুণদের উৎসাহ উদ্দীপনা বরাবরই বেশ ভালো কিছু উপহার দিত। তরুণ সমাজের নববর্ষের শুরু হয় উদ্ভাবনীমূলক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে। প্রত্যেকের ভালো পরিকল্পনাগুলো সম্পন্ন করার প্রত্যয় নিয়ে নতুন বছর শুরু হয়। গ্রামের বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি খেলনা, বাঁশ-বেতের তৈরি আসবাব পত্র, লাঠিখেলা আর বিকেলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সুন্দর একটি দিন পারতাম করতাম। এখন আর সেই আবহমান বাংলার চিরচেনা রুপ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে বর্তমানে শহরের বড় বড় কনসার্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভীড় করতে দেখা যায় তাদের। দিন বদলের পালায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে আসুক এই প্রত্যাশা।

সজিব সরকার
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ


বৈশাখী উৎসব বাঙালির উৎসব

প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় নজরুল বলেছেন, ধ্বংস আর যুদ্ধ থেকেই নতুনের সৃষ্টি হয়! তেমনই বাংলা নববর্ষের কালবৈশাখী ঝড় বা রুদ্র রূপ থেকেই অনুপ্রেরণা পায় বাঙালি। নতুন উদ্যাোমে কাজ শুরু করে বাংলার মানুষ। বৈশাখ উপলক্ষে দেশীয় সংস্কৃতির মহড়া মনে করিয়ে দেয় আমরা বাঙালি। নতুন দিনের প্রত্যাশা নিয়ে প্রতিবছর আমাতের মাঝে আসে পহেলা বৈশাখ।

নাজমুস সাকিব 
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর


ছোটবেলার স্মৃতিতে বৈশাখী উৎসব
লাল সাদা জামা আর মুখে আল্পনা এঁকে চলে যেতাম অনুষ্ঠান দেখতে। রং বেরং এর ফেস্টুন দিয়ে কলেজ সাজানো, চারদিক উৎসবমুখর পরিবেশ।মুগ্ধ হয়ে দেখতাম সবকিছু। এখনো বৈশাখ আসে, এখনো কলেজে যাই। তবে ছোটবেলার সেই মুহুর্ত গুলো স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে সারাজীবন। তবে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ চিরায়ত বাঙালির জীবনে নতুন সম্ভাবনা বয়ে আনবে নতুন বছর- এমনটিই প্রত্যাশা করে সবাই।

সুমাইয়া ইফরাত প্রথমা 
সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ , পাবনা


হালখাতার আনন্দ এখন মলিন 
ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে হালখাতা অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বায়না ধরতাম। থালায় মিষ্টি সাজিয়ে খেতে দিত। মিষ্টির মন মাতানো গন্ধে চারপাশ ছেয়ে যেত। তার চেয়ে আনন্দের ছিল সেখানে অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি।  অনেকক্ষণ ধরে খেলতাম নতুন বন্ধুদের সঙ্গে। প্রতিবছর নববর্ষ আসে, হালখাতা হয়, সেই দিন আর ফিরে আসেনা। আগের মতো হালখাতার আয়োজন করা, অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সুযোগ ও পরিবেশ বোধ হয় এই ব্যস্ততম নগরায়ণ যুগে নেহাতই সীমিত বা নেই বললেই চলে।

সাদমান শুভ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর

এআরএস