সরকারের জারিকৃত নির্দেশনা মেনে গত ২৩ মাসে অনলাইনে সভা নিয়ে প্রায় ৪০ লাখ টাকা সাশ্রয় করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। এতে বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। অর্থ সাশ্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারিকৃত ব্যয় সংকোচন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের ৫ এর ঘ অনুচ্ছেদে অণিবার্য না হলে শারীরিক সকল সভা অনলাইনে করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সেই সরকারি নির্দেশনা মেনে গত বছরের জুলাই থেকে সিন্ডিকেট সভা অনলাইনে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া অর্থ কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিলের অধিকাংশ সভা সশরীরে অনুষ্ঠিত হলেও কয়েকটি সভা অনলাইনে নেয়া হয়। এতে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা সাশ্রয় হয়।
এর আগে জ্বালানী সাশ্রয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বৃহস্পতিবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে প্রতি মাসে প্রায় দুই লাখ বিশ হাজার টাকা করে সাশ্রয় করে বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়।
সূত্রে আরো জানা যায়, ২০২১ সালের ১৪ জুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ। তিনি দায়িত্বগ্রহণের পরেও দেশে করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ছিলো।
ফলে সরকারী নির্দেশনা অনুসরণ করে জরুরিভিত্তিতে অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করেন। প্রশাসনিক কর্মকান্ডেও ম্যানোয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটালাইজড করা হয়। শিক্ষার্থী ভর্তি, ফরম ফিলাপ, ফলাফলসহ সকল ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজড করায় দীর্ঘদিনের সেশনজট এক বছরেই প্রায় মুক্ত হয়ে যায়।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অত্যন্ত শিক্ষার্থী বান্ধব। তিনি নিয়ম ও সরকারী নির্দেশনার প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। একটি মহল বিকৃতভাবে কিছু অসত্য তথ্য গণমাধ্যমে সরবরাহ করে বিশ্বিবদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, ‘যেখানে সরকার কর্তৃক অযাচিত অর্থ ব্যয় কমানোর জন্য কিংবা বরাদ্দ সংকুলান করার জন্য হিমশিম খাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সেখানে অনলাইন এক্টিভিটির কারণে কয়েক লক্ষ টাকা সাশ্রয় হওয়া নিঃসন্দেহে ভালো খবর। তবে আমরা প্রত্যাশা করব সাশ্রয় করা অর্থ যেন পুরোপুরি শিক্ষার্থী বান্ধব খাতে ব্যয় করা হয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা মেনে আমরা একাডেমিক সভা অনলাইনে করি। পূর্বে একটি সভায় যাতায়াত ভাতা ও বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচসহ প্রায় দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হতো। কিন্তু অনলাইনে হওয়াতে সে খরচ এখন এক লাখে নেমে এসেছে।’
আলমগীর চৌধুরী আরো বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন সভা এখনও অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ঠিক হলে এবং সরকারের নির্দেশনা পেলে আমরা আবার সশরীরে সভার আহবান করব।’
এইচআর