জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁসের অভিযোগে লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন শেষে স্মারকলিপি প্রদান করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর আগে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে দেশ এবং বিদেশে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ১৫৭ শিক্ষার্থী উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। উপাচার্যের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জনসংযোগ দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এবং পিএস টু ভিসি এস.এম. হাফিজুর রহমান।
উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে সাবেক শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের অনুমতি ব্যতীত অডিও কল রেকর্ড ধারণ করে এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ শুনে সেই অডিও কল রেকর্ডটি সংগ্রহ করে আমরা তা শুনেছি। অডিও কল রেকর্ডটিতে শিক্ষার্থীদের মতের প্রতি অসহনশীল ব্যবহার এবং চরম অসন্তোষ স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়। এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানান তারা।
জানা যায়, গ্রীষ্ম ও ঈদ উল আজহার দুই বন্ধ মিলে ১৮ জুন থেকে আবাসিক হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় হল প্রশাসন। এই সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনার জন্যে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদারের কাছে আবেদন জানায় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসায় হল খোলা রাখার দাবিতে ১৮ জুন অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা দাবি নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যকে না পেয়ে লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের মেহেদী হাসানের ফোন থেকে উপাচার্যের সাথে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থীর কথোপকথন চলে। সেই কথোপকথনের বিভিন্ন অংশে শিক্ষার্থীদের হল খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছিলেন। অন্যদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলছিলেন না সম্ভব নয়। নিয়মের বাইরে গিয়ে হল আমি খোলা রাখবো না। শিক্ষার্থীর এমন কথা শুনে শ্লোগান দিতে থাকলে উপাচার্য একাডেমিক ভাবে ফলাফল বিপর্যয়ের কথাও বলেন বলে সেই অডিওতে শোনা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে কেনো স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবেনা তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং এই ঘটনায় অধিকতর তদন্তের স্বার্থে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কার আদেশের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে আসন্ন সমাবর্তন প্রত্যাখানের ঘোষণাও দিয়েছেন দশের অধিক সাবেক শিক্ষার্থীর্থী।
আরএস