লাইট জ্বালানোকে কেন্দ্র করে খুবি শিক্ষার্থীকে ইট দিয়ে জখম

খুবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩, ১০:৩৬ এএম
লাইট জ্বালানোকে কেন্দ্র করে খুবি শিক্ষার্থীকে ইট দিয়ে জখম

হলের কক্ষে লাইট জ্বালানো নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষা ডিসিপ্লিনের ‍‍`২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী  লিমন শেখকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ‍‍`২১ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমন শেখ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের কাছে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী লিমন শেখ বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হলের ১১০ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। বুধবার দিবাগত  রাত আনুমানিক ১২ টা ৩০ মিনিট নাগাদ হলের কক্ষে লাইট জ্বালানো নিয়ে ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জারিফের সাথে ওই কক্ষের আরেক শিক্ষার্থী শিক্ষা ডিসিপ্লিনের ‍‍`১৯ ব্যাচের সুমনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জারিফ নিয়মিত গভীর রাত করে রুমে ফেরে এবং লাইট জ্বালিয়ে ব্যাক্তিগত কাজকর্ম করে। কিছু সময়ের মধ্যে ব্যাপরটা মিটেও যায়। কিন্তু মিটে যাওয়ার পরেও জারিফ শিক্ষা ডিসিপ্লিনের ‍‍`১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমনের সাথে খারাপ ব্যবহার ও তাকে হুমকি দেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী লিমন কিছুটা উত্তেজিত হলে তার সিনিয়র সুমন তাকে ধমক দিয়ে থামতে বলে। এরপর জারিফের সাথে লিমনের আর কোন কথা হয়না। পরবর্তীতে লিমন  ঘুমিয়ে পড়ে।

অভিযোগে বলা হয়, হঠাৎ করে বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ ব্যবসা প্রশাসন  ডিসিপ্লিনের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জারিফ, তামিম ও পল রুমে ঢুকে লিমনকে ঘুম থেকে তুলে ‘কথা আছে’ বলে বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। হল থেকে বের হলে ওরা লিমনকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু লিমন তাদের মতিগতি ভাল ছিলনা বুঝতে পেরে বাইরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন লিমন বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হল চত্ত্বরে বসার কথা বলেন। এরপর লিমন ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ‘২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী তামিমের সাথে কথা বলতে গেলে হঠাৎ করে জারিফ লিমনের বুকে লাথি মেরে ফেলে দেয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, জারিফ লিমনকে লাথি মারার পরই আস্ত ইট তুলে মাথায় আঘাত করে। আঘাত করার পর লিমনের মাথায় প্রচুর রক্তপাত শুরু হলে সে হলে ফিরতে চায়। কিন্তু তখন ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের তামিম তাকে হলে যেতে বাধা দেয় এবং অন্য কোথাও নিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মাথায় প্রচুর রক্তপাত হওয়ার কারণে লিমন তৎক্ষনাৎ তার হলের রুমে গিয়ে বিষয়টি সিনিয়দেরকে জানায়। এরপর তারা লিমনকে চিকিৎসার জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিকেল কলেজে (খুমেক) নিয়ে যায়।  তার মাথার ক্ষত স্থানে তিনটা সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

অভিযোগে লিমন আরও জানিয়েছে, এমতাবস্তায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমন ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জারিফ এবং তার দুই সহযোগী তামিম ও পল  কর্তৃক নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাকে রাত ২টার সময় ঘুম থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যেয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আমার কাছে এটি খুবই অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তাদের দেখে মনে হয়েছে তারা আমাকে মার্ডার করার উদ্দেশ্যে এভাবে আমার ওপর শারীরিক নির্যাতন করে। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন কিছু করার সাহস না পায়।’

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জারিফের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদকের পরিচয় জেনে কোন মন্তব্য না করে পাঁচ মিনিট সময় চেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, ‘আমি ঘটনার ব্যাপারে গতরাতেই অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে খান জাহান আলী হল প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ওই তদন্তের প্রতিবেদন পেলেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

এআরএস