আন্তর্জাতিক র্যাং কিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্মানজনক অবস্থান নিশ্চিত করতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সংস্কৃতি তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহী করতে ইউজিসি এ খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দিয়ে গবেষণা পরিচালনা এবং মানসম্পন্ন গবেষণার জন্য এসব শিক্ষার্থীকে সম্মানজনক বৃত্তি এবং আবাসিক সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে রাসায়নিক বিজ্ঞান উপ-শাখার গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন বিষয়ক একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
কর্মশালায় ৩৬টি গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন করা হয়। আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ইউজিসি অডিটোরিয়ামে রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন (রিসাপা) ডিভিশন এ কর্মশালার আয়োজন করে। রিসাপা ডিভিশনের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে প্রফেসর আলমগীর বলেন, ইউজিসি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসম্পন্ন ও ফলধর্মী গবেষণা পরিচালনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে গবেষণায় আগ্রহী করতে এখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণার ফলাফল প্রকাশে অনুদান, আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেমিনার আয়োজনে অর্থ সহযোগিতাসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ইউজিসি। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ গবেষণায় এগিয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
প্রফেসর আলমগীর আরও বলেন, গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি প্রতিরোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রণীত একটি নীতিমালা মহামান্য হাইকোর্টে ইউজিসি প্রেরণ করেছে। এ সম্পর্কে নির্দেশনা পাওয়ার পরে এটি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হবে বলে তিনি জানান।
তিনি গবেষণার বিভিন্ন শাখার প্রকল্প মূল্যায়ন দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে সম্পাদন করতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান। গবেষণা প্রকল্প বাস্তবতার নিরিখে এবং দেশ-জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখছে কিনা সেটি দেখতে মূল্যায়নকারীদের তিনি আহ্বান জানান।
ড. ফখরুল ইসলাম বলেন, ইউজিসি’র অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিটি গবেষণা স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে ইউনিভার্সিটি-ইন্ডাস্ট্রি কোলাবোরেটিভ রিসার্চ গ্রান্টস নামে একটি নীতিমালা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এছাড়া, ইউনিভার্সিটি-ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়ার কোলাবোরেশন জোরদার করার ক্ষেত্রেও ইউজিসি কাজ করছে বলে তিনি অবহিত করেন।
কর্মশালায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আল-নকিব চৌধুরী, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. নুরুল আবছার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. একেএম লুৎফর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এমরান কাইয়ুম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইদ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সাইদ মো. শামসুদ্দিন, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. আবু বিন হাসান সুসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মোতাহার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. নিলুফার নাহার, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কৌশিক শাহা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জামির হোসেন, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাজিবুল হক আকন্দ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া, কর্মশালায় রিসাপা ডিভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক নাহিদ সুলতানাসহ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এইচআর