বর্তমানে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে তারই সাথে তাল মিলিয়ে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই চালু করেছে ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশন মেনেজমেন্ট সিস্টেম (আইইএমএস) প্রযুক্তি।
এই আইইএমএস প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীই পাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা ওয়েব পোর্টালে নিজস্ব আইডি ও দীর্ঘ স্টোরেজ সম্বলিত ওয়েব পেজ। যেখানে তথ্য হালনাগাদের মাধ্যমে যেমন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহজেই শিক্ষার্থীদের তথ্য পাবে, তেমনি একজন শিক্ষার্থী সহজেই দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে তাদের সেমিস্টার ফি জমা দেওয়া, রেজাল্ট ও এডমিট কার্ড সংগ্রহ, সকল নোটিশ, সার্টিফিকেট সংগ্রহসহ ঘরে বসেই বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন।
তবে এই প্রযুক্তি যেহেতু একেবারেই নতুন তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের তত্ত্বাবধানে গঠিত বিশেষ আইটি প্রশিক্ষণ টিম গত ১৯-২০ সেপ্টেম্বর সকল বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দু`দিনব্যাপী বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করেছিল। যেখানে শিক্ষার্থীদের এই প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং সুবিধা সমুহ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।
নিজের আশাবাদ ব্যক্ত করে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ ফজলে রাজ রাব্বি বলেন, `স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ছোঁয়া প্রয়োজন। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ডিজিটাল ব্যবস্থায় আমাদের সময় ও খরচ কমবে, এছাড়া সার্টিফিকেট নিয়ে ভোগান্তি, সেমিস্টার ফি, ভর্তি কিংবা রেজাল্ট দেখা নিয়ে ভোগান্তির অবসান হবে দ্রুতই আশা করি।
এ বিষয়ে সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. করম নেওয়াজ বলেন, `ডিজিটাল যুগ আজকের এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্যই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটাল ব্যবস্থায় আনতে আইইএমএস এর ভূমিকা প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের জন্যই অভাবনীয় পরিবর্তন। এটা সিএসই বিভাগের একার কোনো কৃতিত্ব না। আমরা বিশেষ দল গঠন করে শিক্ষার্থীদেরকে এ নতুন প্রযুক্তির বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তবে প্রশাসনকে ধন্যবাদ এমন সময়োপযোগী উদ্যোগ নেয়ায়।`
এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরাও মাত্র কয়েক সেকেন্ডে তাদের সনদপত্রও সরাসরি ভেরিফাই করে নিতে পারবে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও গত ২৭ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উচ্চগতির ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক অঞ্চলের অনুমোদন হয়। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ক্লাস রুম বাদে নির্দিষ্ট স্থান গুলোতে পাবে ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা। এবিষয়ে প্রধান আইটি কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের জন্য স্মার্ট ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যে আগের ধীর গতির ওয়েবসাইট, আর্থিক লেনদেনের খাতায় হিসাবের কাগজ পত্রের ধারনা থেকে বেরিয়ে আমরা এই ডিজিটাল যুগের সূচনা করতে চাই।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের সাধারণ ওয়েবসাইট পরিবর্তন করে তৈরি হচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা সম্বলিত স্টান্ডার্ড মানের বিশেষ ওয়েবসাইট।
এখনো শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণরূপে আইইএমএস এর অধিভুক্ত না হলেও কাজ চলছে খুব শিঘ্রই তারা সকল সুবিধা ভোগ করবে বলে দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ। তিনি আরও জানান, বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটাইজড করতে সব সময় কাজ করে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের পক্ষে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে কিংবা ক্লাস রুমে বসেই সব কাজ করতে পারবে বলে দাবি করেন তিনি।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, বর্তমান প্রশাসন সব সময়ই দেখতে চেয়েছে স্মার্ট ক্যাম্পাস আর তার স্মার্ট শিক্ষার্থীদের, যা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্বপ্ন ছিল। বিষয়টি এখন সামনে আসলেও এই লক্ষ্যেই কাজ চলমান ছিল আরও এক বছর আগে থেকে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বে আধুনিক স্বপ্নে গাথা নতুনত্বের নেতৃত্ব দিবে।
এআরএস