বেরোবিতে শিক্ষক সমিতির মৌনমিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ

বেরোবি প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৪, ০৪:২০ পিএম
বেরোবিতে শিক্ষক সমিতির মৌনমিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ

সাম্প্রতিক সময়ে ঘোষিত সরকারের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত থেকে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মৌনমিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি শিক্ষকগণ।

মঙ্গলবার (১৪ ই মে,২০২৪) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের  শেখ রাসেল  চত্বরে শিক্ষকগণ কালো ব্যাজ ধারণ করে এই মৌনমিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শেখ রাসেল চত্বরে এসে শেষ হয়।

এতে  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির  সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ বলেন,এই সার্বজনীন পেনশন স্কিম খুবই ভালো তবে তা সাধারণ জনগণের জন্য যারা পেনশন স্কিমের বাইরে আছেন। আমরা এই নীতিমালাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণকে এই বিধিমালার আওতায় নিয়ে আসা হল তাতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছে।

আমাদের বিদ্যমান পেনশন নীতিমালা অনুযায়ী এখন পর্যন্ত মেধাবী যারা তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষকতা পেশায় আছেন। কিন্তু সার্বজনীন পেনশন এস্কিম  নীতিমালার মাধ্যমে মেধাবীরা  হয়তোবা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায়  আসবেন না। কারণ বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী যদি কোন শিক্ষক পাঁচ বছরের মধ্যে মারা যায় তাহলে তার পরিবারের একটা সুরক্ষা থাকে।কিন্তু  সার্বজনীন যে স্কিম চালু করছে তা অনুযায়ী যদি কেউ ৫ বছরের পরে মারা যায়  তাহলে তার পরিবারের আর কোন সুযোগ সুবিধা থাকে না। যদি পরিবারের সুযোগ সুবিধা না থাকে  তাহলে মেধাবীরা  এই পেশায় কেন আসবেন।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. বিজন মোহন চাকী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীরা হয়ে থাকে।  বিদ্যমান পেনশন নীতিমালায়  আমাদের যে সুযোগ সুবিধা আছে তা থেকে  নামিয়ে অন্য একটি পেনশন স্কিম চালু করে তাতে  অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। আমরা মনে করি যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের যদি এই সার্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীরা এই পেশায় আকৃষ্ট হবেন না যা বাংলাদেশের  পরবর্তী প্রজন্ম শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাবে।আমরা চাই  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বাইরে রেখে নতুন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হোক।

শিক্ষক নেতারা আরো বলেন,আগামী ১ জুলাই থেকে যোগদানকৃতদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করার যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। এ ধরনের বৈষম্য বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে শিক্ষাদর্শনের চেতনা থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন, এ প্রজ্ঞাপন সেই  চেতনাকে অবজ্ঞা ও অবমাননা করার শামিল। সর্বজনীন বলতে আমরা বুঝি, সবার জন্য। কিন্তু উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে  যে স্কিম চালু করা হচ্ছে, এটি খুবই বৈষম্যমূলক।সবার জন্য যদি হয়, তাহলে সরকারি কর্মকর্তাগণ এর আভার বাইরে থাকবেন কেন?সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান-সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে একে সর্বজনীন বলার সুযোগ নেই।


শিক্ষক সমিতির এই মৌনমিছিলেসহ-সভাপতি আসিফ  আল মতিন, কোষাধক্ষ ড.মো: হারুন-অর রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাজ্জাদ হোসেন পাটোয়ারী, বহিরঙ্গণ পরিচালক ও কার্যকরী সদস্য সাব্বীর আহমেদ চৌধুরী, প্রক্টর মোঃ শরিফুল ইসলাম, মোঃ আব্দুল্লাহ-আল-মাহবুব, এস. এম. আশরাফুল আলম, মোঃ শাহীনুর রাহমান, ড. বকুল কুমার চক্রবর্তী, মোঃ সাইফুল ইসলাম, ড. মোঃ কামরুজ্জামান, ড. মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

বিআরইউ