হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে দেড় ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচির পর শাহবাগ মোড় ছেড়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এরপর ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
বুধবার (৩ জুলাই) বিকেল সোয়া ৫টায় শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে আজকের কর্মসূচির শেষ করে। এসময় তারা আগামীকাল বেলা ১১টায় অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করে।
কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারী ঢাবি শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেড় ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধের পর আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করছি। আগামীকাল হাইকোর্ট এই কোটা পুনর্বহালের রায় দেবে। তাই আমরা আগামীকাল বেলা ১১টায় আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করব। এ সময় আমরা সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে অবস্থান গ্রহণ করব। যদি হাইকোর্টের এই রায় আমাদের বিরুদ্ধে যায় তাহলে আমরা সে অনুযায়ী নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হব।
এর আগে দুপুর আড়াইটায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি-হাইকোর্ট-মৎস্যভবন হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থা নেয়।
বিকেল পৌনে ৪টায় শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে আশেপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শাহবাগ অচল হয়ে পড়ে। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে তারা এই অবরোধ তুলে নেন। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পরে তা স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
প্রসঙ্গত, এবার শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবিতে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। দাবিগুলো হলো :
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২. পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন পূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
প্রসঙ্গত, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ৫ জুন বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আরএস