ঢাবির এফ রহমান হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকি ১৮ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম
ঢাবির এফ রহমান হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকি ১৮ লাখ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এফ রহমান হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতারা ১৭ লাখ ৮৯ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্যান্টিনের মালিক বাবুল।

২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন থেকে ৫ বছরে ছাত্রলীগ নেতারা এ বাকি খেয়েছেন বলে দাবি তার।

শুক্রবার স্যার এফ রহমান হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকির একটি তালিকা প্রকাশ হয়।

এ তালিকায় ৪৮ জনের বাকির হিসেব পাওয়া যায়। তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের অধিকাংশই হল ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পদধারী ।

তালিকায় দেখা যায়, সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন।

এছাড়া বাকির তালিকায় রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলী হাসান রিফাত ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহিম সরকার ৫৫ হাজার টাকা, হল সংসদের সাবেক ভিপি আবদুল আলীম ৬০ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক কামরুল শুভ ১৭ হাজার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আবছার হোসেন রানা ৪৫ হাজার টাকা, বাইজিদ ৪৫ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজু ১২ হাজার টাকা, ছাত্রলীগ নেতা হারুন ৭০ হাজার ও উচ্ছল ৮৫ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন। এছাড়াও বাকির তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের সর্বনিম্ন বাকির পরিমাণ আড়াইহাজার টাকা।

হলের শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রলীগ নেতাদের এমন ‍‍`বাকি‍‍` খাওয়ার কারণে ক্যান্টিন মালিক খাবারের দাম বাড়িয়েছেন এবং মান নষ্ট হয়েছে। এর ফল ভোগ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আমাদের টাকায় খেয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এই টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রফিক শাহরিয়ার বলেন, আমিও বিষয়টি দেখেছি কিছুক্ষণ আগে। আমার কাছে ক্যান্টিন মালিক অভিযোগ দেননি। এর আগেও আমি ক্যান্টিন ঘুরে তার খাবারের মান নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি, তার কাছে কেউ বাকি খায় কি না জানতে চেয়েছি।

তিনি বলেন, এত টাকা বাকি খেলে তিনি কীভাবে ক্যান্টিন পরিচালনা করেছেন আমি জানি না। তিনি আগের প্রভোস্টের কাছে কোনও অভিযোগ দিয়েছিলেন কি না সেটাও দেখতে হবে। এত টাকা বাকি থাকার পরও তিনি কীভাবে ক্যান্টিন চালিয়েছেন সেটাও দেখার বিষয়। এটি তদন্তের বিষয়। তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে ক্যান্টিন মালিক বাবুল বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতারা আমার ক্যান্টিন থেকে নিয়মিত বাকি খেয়েছেন। আমি তাদের কিছু বলতে পারতাম না, অভিযোগ দেওয়ারও সুযোগ ছিল না। এ পর্যন্ত মোট ১৮ লাখ টাকার বাকি খেয়েছেন তারা। সভাপতি রিয়াজ আর সেক্রেটারি মুন দুজনই ৬ লাখের মত বাকি খেয়েছেন এই ৫ বছরে। টাকা চাইলেও তারা দিতেন না, আমাকে প্রেশারে রাখতেন। এখন তারা আমাকে পথে বসিয়ে পালিয়েছেন। আমি প্রভোস্ট অফিসে এই লিস্ট জমা দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ, সাধারণ সম্পাদক মুন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহিম সরকারসহ একাধিক নেতাকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

ইএইচ