পবিপ্রবিতে রাতভর র‌্যাগিং: হাসপাতালে ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৭

পবিপ্রবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
পবিপ্রবিতে রাতভর র‌্যাগিং: হাসপাতালে ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৭

র‌্যাগিংয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিলেও রাতভর র‌্যাগিংয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ৭ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে।

এম. কেরামত আলী হলে অবস্থানরত স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪) শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ দেয়া হয়। র‌্যাগিং চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৩ জন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই অমানবিক নির্যাতনের কারণে অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেননি।

২০২৩-২৪ সেশনের অন্তত চারজন শিক্ষার্থী জানান, আনুমানিক রাত ১২টায় ইমিডিয়েট সিনিয়ররা গণরুমে সকলের ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। আমাদের কান ধরে উঠাবসা করতে বাধ্য করে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, বিভিন্ন বাধ্যতামূলক নিয়ম বলে, সিগারেটের ধোঁয়ায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে গণরুমে। এছাড়াও আমাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।

র‌্যাগিংয়ের খবর পেয়ে এম. কেরামত আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী প্রক্টর মো. আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গণরুমে ঢুকে র‌্যাগিং দেওয়ার সাথে যুক্ত দুই জনকে কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেন এবং ক্যান্টিনে গিয়ে চারজনকে র‌্যাগিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

এ পর্যন্ত পবিপ্রবি প্রশাসন থেকে পাওয়া বক্তব্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ সেশনের ৭ জন শিক্ষার্থী জড়িত বলে নিশ্চিত করেছেন।

পরিস্থিতি অনুযায়ী ৩ জন অসুস্থ শিক্ষার্থীর অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন হওয়ায় রাতেই তাদেরকে পবিপ্রবির হেলথ কেয়ারের কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বলেন এবং রাতেই পবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, ‘এ পরিস্থিতি একেবারেই কাম্য নয়। ঘটনার সাথে যে বা যারা যুক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি এমন পরিস্থিতি যেন পরবর্তীতে আর না ঘটে এজন্য পবিপ্রবি প্রশাসন আরও অধিক তৎপর হবে এবং এ জন্য সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।’

ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম আজ সকালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়ে সর্বোচ্চ সুচিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং র‌্যাগিংয়ের সাথে যারা যুক্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

ইএইচ