জবি শিক্ষার্থীদের উপর বিএনপি নেতার হামলা, আহত ৭

জবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৫, ১০:৫৯ এএম
জবি শিক্ষার্থীদের উপর বিএনপি নেতার হামলা, আহত ৭

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয় বিএনপি নেতা শহিদুল হক সহিদের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনায় অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মঙ্গলবার বিভিন্ন সূত্রে আহতদের এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। এর আগে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে রাস্তায় নির্মাণাধীন ঢালাইয়ের ওপর পা দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা  বিভাগের  শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান সম্রাট ধোলাইখাল এলাকার একটি মার্কেটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ভুলক্রমে নির্মাণাধীন এক ঢালাইয়ের উপরে পা দেন।

এ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে তার কথা-কাটাকাটি হয়, এরপর স্থানীয় লোকজন মিলে এই শিক্ষার্থীকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের কল দিলে তার বন্ধু হাবিবসহ আরও দুইজন ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর স্থানীয় লোকজন হাবিবসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থীকে মারধর করে আটক করে রাখে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আটকে রাখার ঘটনা ফেসবুকে ছড়ালে ক্যাম্পাসের আশেপাশে থাকা  কয়েকশো শিক্ষার্থী তাদের ছাড়াতে ঘটনাস্থলে যান, এরপরই স্থানীয়রা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ওয়ারি থানার ৩৮ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক শহিদের নেতৃত্বে পুনরায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেন স্থানীয়রা।

রাতভর চলা দুই পক্ষের সংঘাত নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে র‍্যাব ও পুলিশের কয়েকশো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। এ সময় ভাঙচুর চালানো হয় স্থানীয় কয়েকটি বসতঘর ও পঞ্চায়েত ক্লাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ বলেন, ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান সম্রাটকে বিনাকারণে স্থানীয় বিএনপি নেতা শহিদুলের নেতৃত্বে মারধর করে এবং তাকে প্রটেক্ট করার জন্য কয়েকজন গেলে তাদেরকে মেরে আটকে রাখে। পরবর্তী আমরা ক্যাম্পাস থেকে কয়েকশো শিক্ষার্থী ছাড়িয়ে আনতে গেলে আমাদের ওপর তারা হামলা চালায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে আটকে রাখার সাহস তারা কীভাবে পায়। যারা এ হামলার সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ঘটনা শোনার পরে আমি কোতোয়ালি, সূত্রাপুর, বংশাল, ওয়ারি থানা সবাইকে কল দিয়েছি। তারা ফোর্স পাঠিয়েছে । আটকে রাখা শিক্ষার্থীকে তারা ছেড়ে দিয়েছে । যার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে তাকে ধরার জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে পুলিশ ওয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এক শিক্ষার্থী মারধর করে আটকে রাখেন ধোলাইখালের স্থানীয়রা। এরি জেরে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা দাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা শহিদুল হক শহীদের নেতৃত্বে এ হামলা হয়। রাত ৩:৩০ এ পুলিশ ও র‍্যাবের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। 

এদিকে এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বাদ জোহর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলের আহ্বান জানানো হয়েছে।  

বিআরইউ