ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে কুবিতে বিক্ষোভ

কুবি প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম
ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে কুবিতে বিক্ষোভ

সারাদেশে অব্যাহত নারী সহিংসতা, খুন, ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গোল চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা এসব অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

রোববার (৯ মার্চ) ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে কুবি এর উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়, ‍‍`তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া‍‍`, ‍‍`আসিফ নজরুল তুই আইন দে, নইলে গদি ছাইড়া দে‍‍`, ‍‍`সারাবাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে‍‍`, ‍‍`একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর‍‍`।

এসময় বক্তব্য রাখেন সহকারী প্রক্টর ড. নাহিদা বেগম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান, বাংলা বিভাগের ড. কামরুন নাহার, প্রভাষক গোলাম মাহমুদ পাভেল, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মতিউর রহমান, মশিউর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‍‍`জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা লাল স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু নারীদের স্বাধীনতা কোথায়? নারীরা আজ সর্বত্র নিপীড়িত হচ্ছে, ধর্ষিত হচ্ছে কিন্তু প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ধর্ষকদেরকে দেশের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি‍‍`।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান বলেন, ‍‍`ধর্ষণ ই হচ্ছে একমাত্র অপরাধ যেখানে ভিক্টিমকে অভিযোগ দেওয়া হয়। আমি একজন বাবা হিসেবে আমার মেয়েকে নিয়ে শঙ্কা বোধ করছি। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যেন অপরাধীদেরকে দ্রুত বিচারের আওয়াত আনা হয়‍‍`।

বাংলা বিভাগের শিক্ষক কামরুন নাহার বলেন, ‍‍`সারাদেশ যেন ধর্ষণযজ্ঞে মেতে উঠেছে। দুধের বাচ্চাটি পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না। এতো কিছু হওয়ার পরেও প্রশাসনের আচরণ কেন রহস্যজনক? প্রশাসনকে বলবো সকল হত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে একটু সুস্থ ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলুন‍‍`।

সহকারী প্রক্টর নাহিদা নাহিদ বলেন, ‍‍`আমরা সবাই এখানে ধর্ষণের প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছি। ধর্ষণের মতো জঘন্যতম অপরাধ কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এর দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি‍‍`।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম বলেন, ‍‍` নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করতে ধর্ষককে প্রতিহত করতে গিয়ে যদি কেউ মারা যান তাহলে সম্মানীয়। সারাদেশের সকল মা-বোনদেরকে বলবো নিজেকে ধর্ষকের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। ধর্ষকদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে‍‍`।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জুলফা বলেন, ‍‍`একজন নারীর জন্মের পর থেকে সে  বিভিন্নভাবে হ্যারেসমেন্টের শিকার হয়। সারাদেশে এখন ধর্ষণের হার বেড়েই চলেছে। আজকে যদি আমরা আছিয়া‍‍`র জন্য ঐঐক্যবদ্ধভাবে কথা না বলি তাহলে হয়ত কালকে আপনার আমার সাথেও এরকম ঘটবে। তখন একা একা চিৎকার করেও কোনো লাভ হবে না। খুব দ্রুত ধর্ষকের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে, যাতে আর কেউ কখনো এ ধরণের জঘন্য কাজ করার সাহস না করে‍‍`।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা জেলার ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে তার বোনের শ্বশুর, স্বামী এবং দেবর ধর্ষণ করে। যার ফলে আছিয়া এখন রাজধানীর সিএমএইচ এর আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। যার প্রতিবাদে এই মুহূর্তে উত্তাল হয়ে উঠেছে সারাদেশ।

বিআরইউ