মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা আট বছর বয়সী মেয়ে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে শাখা ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে এই গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযায় ইমামতি করেন শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের দাওয়াহ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, "সামাজিক অবক্ষয়ের প্রধান কারণ নৈতিকতাহীন শিক্ষা। পাশ্চাত্য মূল্যবোধহীন শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে ধর্ষণ রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য নৈতিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষা বিস্তার করতে হবে। পাশাপাশি, কুরআনের বিধান অনুযায়ী দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবেই ধর্ষণমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব হবে।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, "দীর্ঘসূত্রতা, বিচারহীনতা এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই আজকের আছিয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে এ ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটে। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং ধর্ষণমুক্ত সমাজ গঠনে তরুণদের দায়িত্ব নিতে হবে। ইসলামি মূল্যবোধ অনুসারে আত্মগঠনের মাধ্যমেই আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।"
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, "আমরা বাংলাদেশে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা আর দেখতে চাই না। প্রশাসনকে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রাখার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। আমরা আর গায়েবানা জানাজা পড়তে চাই না। ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি।"
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়, অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ ১৩ মার্চ ২০২৫ তারিখে দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এর সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে, দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসেনি। গত ৮ মার্চ শিশুটিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকার সিএমএইচ-এ ভর্তি করা হয়।
ইএইচ