পদ পাওয়ার পর স্ত্রীকে ‘জোরপূর্বক’ ডিভোর্স জাবি ছাত্রদল নেতার

জাবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৫, ১১:২৬ এএম
পদ পাওয়ার পর স্ত্রীকে ‘জোরপূর্বক’ ডিভোর্স জাবি ছাত্রদল নেতার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে পদায়নের পর স্ত্রীকে জোরপূর্বক ডিভোর্স দেওয়ার অভিযোগ এসেছে শাখা ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল অন্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনের (৪৬ ব্যাচ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিতে ২ নং সদস্য হিসেবে আছেন। শাখা ছাত্রদলের পরবর্তী কমিটিতে বড় পদে আসীন হতে পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে জোরপূর্বক ডিভোর্স দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী নারী।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের জুন মাসে অন্তরের সঙ্গে আনিকার বিয়ে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষে চাকরি পেলে অন্তর আনিকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তা বাস্তবে ফলেনি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পরিবর্তন আসে অন্তরের আচরণে। ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের পর এই পরিবর্তন আরও প্রকট হয়। অন্তর যুক্ত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে। বনে যান সক্রিয় নেতা। ধীরে ধীরে আনিকার সাথে বাড়াতে থাকে দূরত্ব। একপর্যায়ে অন্তর আনিকাকে ডিভোর্সের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এ নিয়ে আনিকা অভিযোগ করবে জানালে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব অভিযোগ থেকে পার পেয়ে যাবেন জানিয়ে উলটো হুমকি দেন অন্তর। সর্বশেষ পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে গত ১১ মার্চ জোরপূর্বক ডিভোর্স দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন আনিকা।

ভুক্তভোগী আনিকা বলেন, অন্তর মূলত আমাকে বিয়ে করেছিল টাকার জন্য। প্রায় দুই বছরে অনেক টাকা দিয়েছি তাকে আমি। তার ক্যারিয়ার গড়তে ঝুট ব্যবসার জন্য প্রথমে ৩০ লাখ ও পরবর্তীতে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তি হয়েছিলো তার সাথে। তবুও তার আচরণে কোন পরিবর্তন আসে নি। অন্তরের পরিবারও আমাকে কোনো ধরনের সমর্থন দেয় নি। উলটো তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছি এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। সে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে এলাকায় ছাত্রলীগ করতো, আন্দোলনের পর এখন ছাত্রদল হয়েছে। তার পুরো পরিবারই সুবিধাবাদী। যখন যে সরকার থাকে সেই দল করে সুবিধা নেয়। আমাকে ডিভোর্স না দিলে ছাত্রদলে সুবিধা করতে পারবে না বলে জোরপূর্বক মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে।

আনিকার মা সাহিদা বেগম জানান, অন্তর জুলাইয়ে শেষবার আমাদের বাড়িতে এসেছিল। এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ রাখে নি। ছেলেটাকে আমরা খুবই ভালোবাসতাম। কিছুদিন আগে ওকে কল দিলে আমাকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালি দেয়। আমার কণ্ঠ এডিট করে নোংরা গালির অডিও বানায় সে। সর্বশেষ দু’দিন আগে জোরপূর্বক প্রভাব খাটিয়ে আমার মেয়েকে ডিভোর্স দিয়েছে।

ক্যাম্পাস ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ অন্তর জোরপূর্বক ডিভোর্সের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের দুই ফ্যামিলি বসেই আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে, জোরপূর্বক ডিভোর্সের মত কোন ঘটনা ঘটে নি। ডিভোর্সের পরে আমার মান সম্মান নষ্ট করার জন্যই এসব অভিযোগ করছে। এলাকায় ছাত্রলীগ করার বিষয়ও তিনি অস্বীকার করেন এবং তার নামে দুইটা মামলাও ছিল বলে জানান।

বিআরইউ