জবি শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় গাবতলী লিংকের ১০ বাস আটক

জবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
জবি শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় গাবতলী লিংকের ১০ বাস আটক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের ১০টি বাস ক্যাম্পাসে এনে আটকে রেখেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার সকালে যাত্রাবাড়ী থেকে বাসগুলো নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সামনে রাখা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম কিরণ কুমার রবিদাস, তিনি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, গুলিস্তান থেকে কল্যাণপুর যাওয়ার জন্য ৮ নম্বর গাবতলী বাসে ওঠেন কিরণ কুমার রবিদাস। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে বাস না ছাড়ায় এবং ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসায় কন্ডাক্টর ও হেলপারের সঙ্গে একাধিক যাত্রীর বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাসচালকের সঙ্গেও হাতাহাতিতে জড়ান কিরণ।

পরবর্তীতে বাস ছেড়ে দিলে অন্যান্য যাত্রীরা নেমে গেলেও কিরণকে কল্যাণপুরে নামতে দেয়া হয়নি। বাসের স্টাফরা তাকে আটকে রেখে গালিগালাজ করে, অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে এবং একপর্যায়ে মারধর করে। পরে প্রাণ বাঁচাতে এক বাইক আরোহীর সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, দুই দিন আগেই জগন্নাথের এক নারী শিক্ষার্থীকে ‘ভিক্টর ক্লাসিক’ বাসে হয়রানি করা হয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মারধর করা হলো।

এক শিক্ষার্থী বলেন, "ভিক্টর ক্লাসিকের ঘটনা জরিমানা দিয়ে সমাধান হয়েছে, কিন্তু গাবতলী লিংকের স্টাফরা সীমা অতিক্রম করেছে। এখন থেকে আমাদের ভাই-বোনদের সঙ্গে যেন কোনো বাসের কর্মী দুর্ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যবস্থা আমরা নেব। বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই বাসগুলো এখান থেকে সরবে না।"

কিরণ কুমার রবিদাস বলেন, "আমি শুধু যথাসময়ে বাস ছাড়তে বলেছিলাম। কিন্তু আমাকে আলাদাভাবে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে। আমি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও কেন আমার ওপর হামলা হলো? আমি এ ঘটনার বিচার চাই এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।"

গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের এক হেলপার জানান, "আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের সুবিধা দিই। কিন্তু আমাদের কয়েকজন স্টাফ বড় ধরনের অপরাধ করেছে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। মালিকপক্ষ এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসবে এবং সমস্যার সমাধান করবে।"

বাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রুবেল জানান, "ঘটনাটি জানার পর থেকেই আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আমরা বুঝিনি এমন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব এর সমাধান করব।"

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম রিফাত হাসান বলেন, "ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।"

তবে এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ইএইচ