সনদ পেতে ঘুরতে হয় সাত দপ্তরে: চরম ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

বিজয় সরকার, মাভাবিপ্রবি প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ০২:০০ পিএম
সনদ পেতে ঘুরতে হয় সাত দপ্তরে: চরম ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) একটি সনদ উত্তোলনের আবেদন করতেই শিক্ষার্থীদের অন্তত সাতটি দপ্তরে ঘুরতে হয়, ফলে তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, নম্বরপত্র ও সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উত্তোলন করতে একাধিক দপ্তরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে সম্পূর্ণ সনদ উত্তোলন প্রক্রিয়াকে অনলাইন করার দাবি জানিয়ে আসছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সনদ উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করতে দীর্ঘ লাইন ধরতে হয়। এরপর আবেদন ফরম পূরণ করে শিক্ষার্থীদের নিজ বিভাগে জমা দিতে হয়, যেখানে বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। পরবর্তীতে হলের প্রভোস্ট, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ, রেজিস্ট্রার অফিসের একাডেমিক শাখা, বিএনসিসি প্লাটুন কমান্ডার এবং হিসাব অফিসের ছাত্র বেতন শাখায় যেতে হয়।

অনেক সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, যা সপ্তাহজুড়ে গড়াতে পারে। ফলে সনদ উত্তোলন করতে এসে শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পূর্বে সাবেক শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পরিবর্তন আসেনি।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের স্নাতক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী আদিব রহমান রাহাত বলেন, ‘সনদ উত্তোলন করতে একাধিক দপ্তরে ঘুরতে হয় এবং কর্তাব্যক্তিদের না পাওয়ায় সময় নষ্ট হয়। অনলাইনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সহজেই সমস্যার সমাধান হতো।’

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ রহমান বলেন, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও এখনও সনাতন পদ্ধতিতে কাজ চলছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনা করলে শিক্ষার্থীরা হয়রানি থেকে মুক্তি পেতেন।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. আল মামুন সরদার বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে জানি না, এটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলতে পারবেন।’

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ফলাফল প্রক্রিয়াকে অটোমেশন করেছি। ২০২১-২২ সেশন থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যাংকে লাইন ধরে টাকা জমা দিতে হয় না। তবে সনদ উত্তোলন প্রক্রিয়ার ডিজিটালাইজেশন নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে এবং একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইএইচ