যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনে স্ত্রী ও তার প্রেমিককে হত্যার জন্য খুনি ভাড়া করার অপরাধে এক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ছদ্মবেশি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি (আন্ডারকভার ফেডারেল এজেন্ট)।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) মোহাম্মদ চৌধুরী (৪৬) নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রী ও তার প্রেমিককে হত্যার জন্য ৮ হাজার ডলারে ভাড়াটে খুনির সাথে চুক্তি করেছিল। তার ওপর হত্যা চুক্তির অভিযোগ আনা হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি আদালতে পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে ম্যাসাচুসেটসের মার্কিন অ্যাটর্নি জানিয়েছেন। শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাকে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বোস্টনের বাংলাদেশি প্রবাসীদের একটি সূত্র জানিয়েছেন, মোহাম্মদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে বোস্টনে বসবাস করছেন। তার দেশের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারি উপজেলায়। সাম্প্রতি তার স্ত্রী পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়লে স্ত্রী ও তার প্রেমিককে হত্যার জন্য তিনি নিজের অজান্তে ভাড়াটে খুনি মনে করে ছদ্মবেশি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি (আন্ডারকভার ফেডারেল এজেন্ট)-এর সাথে ৮ হাজার ডলারে চুক্তি করেন।
আন্ডারকভার ফেডারেল এজেন্টের বরাতে প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, চৌধুরী তাদেরকে হত্যা করার জন্য গত বছর নভেম্বরে নিজের অজান্তে ভাড়াটে খুনি মনে করে আন্ডারকভার ফেডারেল এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ওই ব্যক্তিকে বলেন যে তিনি আগে কাউকে এ কাজটি করার জন্য নিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু তিনি কিছু অর্থ নিয়েও কাজ করেননি।
চৌধুরী তাকে বলেন, তিনি তাড়াহুড়ো করছেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের হত্যা করা দরকার। তিনি কাজটি সম্পন্ন করার জন্য এতটাই মরিয়া ছিলেন যে চৌধুরী এজেন্টকে বলেছিলেন যে প্রয়োজনে টাকা পেতে তিনি একটি দোকান ডাকাতি করবেন।
কর্তৃপক্ষ জানান, তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সাহায্য চেয়েছেন। ফলে একজন কর্মকর্তা হত্যাকারী হিসাবে জাহির করার রাগান্বিত স্বামীর সাথে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। চৌধুরী তখনও জানতেন না যে তিনি আন্ডারকভার ফেডারেল এজেন্ট। চৌধুরী এই এজেন্টের সাথে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে একাধিকবার সাক্ষাত করেন এবং হত্যার পরিকল্পনা ও যুক্তি তুলে ধরেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চৌধুরী দু`টি হত্যাকাণ্ড শেষ হলে তিনি ৮ হাজার ডলার দিতে রাজি হন। তিনি এই জুটির ছবি, তাদের ঠিকানা, তারা কোথায় কাজ করেছেন এবং তাদের সময়সূচিও বলে দিয়েছেন।
তিনি গত মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সে ভাড়াটে খুনির সাথে দেখা করে কাজের জন্য ৫০০ ডলার অগ্রিম প্রদান করেন। বাকি অর্থ কাজ শেষে পরিশোধ করবেন বলে জানান। তিনি পুনরায় নিশ্চিত করেন যে তিনি খুনটি করতে চান। এ সময় এজেন্টরা তাকে আটক করে।
প্রসিকিউটর বলেন, তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এটি প্রথম ঘটনা নয়। ২০১৯ সালের অক্টোবরে চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি অপব্যবহার প্রতিরোধ আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছিল যা তাকে তার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করতে বা তার নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। খুনি ভাড়ার জন্য হত্যার ষড়যন্ত্রে দোষী প্রমাণিত হলে চৌধুরীকে ১০ বছরের জেল হতে পারে বলে প্রসিকিউটররা উল্লেখ করেন।
কেএস