মালয়েশিয়ায় দীপাবলি উৎসবে সরকারের বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা

আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৩, ০৩:১৪ পিএম
মালয়েশিয়ায় দীপাবলি উৎসবে সরকারের বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা

দক্ষিণ এশিয়ার অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত মালয়েশিয়া। সব জাতি, ধর্ম, বর্ণের শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ অবস্থান এই উপদ্বীপে। এখানে ধর্মীয় সহিংসতা একেবারে শুন্য।

মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার ৬ ভাগ নাগরিক ইন্ডিয়ার তামিল বংশধর। তাদের ধর্ম হিন্দু হলেও পূজাপার্বণে রয়েছে ভিন্নতা।

আগামী ১৩ নভেম্বর দীপাবলি/দিওয়ালি উদযাপন উপলক্ষে তামিল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ব্যাপকভাবে প্রস্ততি নিচ্ছে।

তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবটি পরিপূর্ণ করতে দেশটির সরকার ও প্রবাসীরাসহ সব জাতি ধর্ম নানাভাবে সহানুভূতি প্রদর্শন করছেন। এখানে মিক্স কালচার দেখে বুঝা যায় না এটা কি পশ্চিমা নাকি এশীয় কালচার।  সব জাতি, ধর্ম, বর্ণের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মালয়েশিয়া।

মালয়েশিয়া সেপাং জেলার তামান পারমাতা তামিল স্কুলের শিক্ষিকা মিসেস সেলভি ও মিসেস কল্পনা বলেন, আমরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি এই দিপাবলী উৎসবটি সব জাতির সঙ্গে ভাগাভাগি করে উপভোগ করার জন্য।

মালয়েশিয়ায় তামিল হিন্দুদের দূর্গাপূজার চেয়ে সবচেয়ে বড় প্রধান ধর্মীয় উৎসবটি হচ্ছে শুভ দীপাবলি/দিওয়ালি। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে নানা আয়োজনে প্রস্ততি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা।

মালয়েশিয়ান হিন্দুরা দেব মুরুগানের ভক্ত। রাজধানীর বাতু কেভ্স গুহায় রয়েছে মুরুগানের মূর্তি যা বিশ্বের সবচেয়ে  বড় মূর্তি। দেব মুরুগান কে নিয়ে তাইপুসাম নামে আরেকটি উৎসব পালনও করে তারা। দীপাবলি উৎসবকে আরও আনন্দঘন করতে দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় ১০টি পণ্যের দাম কমানো হয়েছে।

তাছাড়াও মালয়েশিয়ায় প্রতিদিন প্রায় চার থেকে মিলিয়ন যানবাহন চলাচল করে। মহাসড়কে প্রায় শতাধিক স্বয়ংক্রিয় টোল প্লাজা রয়েছে। তাদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আগামী দুইদিন সকল টোল ফ্রি করে দিয়েছে সরকার যা আজ রাত ১২টা থেকে কার্যকর হবে।  

তবে, মালয়েশিয়ায় সংখ্যাঘরিষ্ঠ মুসলমান ছাড়াও হিন্দু, বৌদ্ধ খিস্ট্রান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবে এসব ছাড় দেয় সরকার। আর এর সফল ভোগ করতে পারে সব জাতি ধর্ম গোষ্ঠীর লোকেরা।

দীপাবলি উৎসবে শুধু মালয়েশিয়ান হিন্দুরা নয় এটা উদযাপন করে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশী ও ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়। দীপাবলি উৎসবে দিনটিতে একদিনের সরকারি ছুটি থাকে।

মালয়েশিয়ায় তামিল সম্প্রদায়ের কোম্পানী গুলোতে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিশেষ নিমন্ত্রণসহ আমপাও বা সালামী পেয়ে থাকেন। এমন উৎসবে বাংলাদেশী ও ভারতীয় জনগোষ্ঠীর এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।

এ বিষয়ে  বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতা ব্যবসায়ী মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে সনাতনধর্মালম্বী ব্যবসায়ীরা আমাদের কে দাওয়াত দেয়, আমরাও বিভিন্ন ভাবে তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রবাসে মিলেমিশে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারি।

এআরএস