হতদরিদ্র পরিবারের সুদিন ফিরিয়ে আনতে ধারদেনা করে ২০২৩ সালের শেষের দিকে কলিং ভিসায় কাজ নিয়ে মালয়েশিয়া যান টাঙ্গাইলের মো. আলহাজ মিয়া (২১)।
রিক্রুটিং এজেন্সি ও নিয়োগ কর্তার অভিনব কৌশলী প্রতারণার শিকার হয়ে এক বছর না যেতেই লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হলো হতভাগ্য শ্রমিক আলহাজ মিয়াকে। তার পাসপোর্ট নম্বর B00500116, তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২০ মার্চ।
আলহাজ মারা গেছেন গত ২৬ মার্চ। মৃত আলহাজ মিয়া টাংগাইল জেলার ঘাটাইল থানার ১১ নম্বর ধলাপাড়া ইউনিয়নের গাংগাইর গোনাপাড়া এলাকার মো. মজনু মিয়ার ছেলে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এনওসি সার্টিফিকেট ইস্যু হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে আগামী দুদিনের মধ্যে লাশ বাংলাদেশে থাকা পরিবারের কাছে পৌঁছবে।
জানা গেছে, আকাসিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ কেলান্টন সেনডিরিয়ান বারহাদ নামে একটি রাবার কোম্পানিতে কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় আসার পর ছয় মাস কোনো কাজ পায়নি আলহাজ মিয়া এবং তার সাথে আসা অন্য সহকর্মীরা। বাধ্য হয়ে পালিয়ে গিয়ে অন্য জায়গায় কাজ খুঁজতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফেরার সময় ইমিগ্রেশন পৌঁছেই অসুস্থ হয়ে মারা যান আলহাজ। সে পালিয়ে যাওয়ায় ওই দিকে তার কোম্পানি মালিক তাকে ব্লাকলিষ্ট করে নিষিদ্ধ করায় হাসপাতালে আলহাজের লাশ পড়েছিল এক মাস। লাশ পাঠাতে প্রয়োজন এক লাখ টাকারও বেশি। মালয়েশিয়ার শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানি কর্তৃক ব্ল্যাকলিস্ট করা হলে কর্মীর লাশ দেশে পাঠানোসহ যাবতীয় কোনো দায় দায়িত্ব ওই কোম্পানির ওপর আর থাকে না।
এ অবস্থায় পরিবার পরিজন ও তার মায়ের আকুতি মিনতির পর মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাহায্যের হাত নিয়ে এগিয়ে আসেন একই এলাকার মালয়েশিয়া যুবদল নেতা মো. রমজান আলী। তিনি আলহাজের লাশ দেশে ফেরত পাঠাতে তার সহকর্মী ও প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা উঠানোর দায়িত্ব নেন।
এ বিষয়ে মো. রমজান আলী বলেন, কাজাং হাসপাতালে লাশটি ২৭ দিন পড়ে থাকার পর পরিবারের অনুরোধে আমার দল ও প্রবাসীদের সহযোগিতায় লাশটি দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্ততি নিচ্ছি। আলহাজের দেশের বাড়ি আমার এলাকায়। ইতোমধ্যে অর্ধেক টাকা সংগ্রহ হয়েছে বাকি টাকা সংগ্রহের জন্য সকল প্রবাসীদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
মো. রমজান আলী বলেন, কেউ সাহায্য করতে চাইলে হোয়াটস অ্যাপ +60 16-601 4401 এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
এই বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) শরিফুল ইসলাম বলেন, মো. আলহাজ মিয়ার লাশ কাজাং হাসপাতালে পড়ে থাকার খবর পেয়ে আমরা Acacia industries kelanton কোম্পানিতে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা তার লাশ দ্রুত দেশে ফেরত পাঠাতে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে যাবতীয় অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আলহাজের ইন্সুইরেন্সের টাকা যাতে পায় সেজন্য ওই কোম্পানি থেকে ডকুমেন্টস প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে।
ইএইচ