মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ই-পাসপোর্ট ও ভিসা পরিষেবা প্রদানকারী আউটসোর্সিং কোম্পানি এক্সপ্যাট সার্ভিসেস কুয়ালালামপুরের (ইএসকেএল) সঙ্গে সরকার চুক্তি বাতিল করেছে।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস কোম্পানিটিকে তিন মাসের নোটিশ দিয়ে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অফ চ্যান্সেরি প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ৩ ডিসেম্বর চিঠি ইস্যু করে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এর আগে ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইএসকেএলের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট ও ভিসা পরিষেবার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
ইএসকেএলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, এই কোম্পানিটির পূর্বে ট্রাভেল পাস, ই-পাসপোর্ট, এনআইডি বা অন্য কোনো স্পর্শকাতর সেবার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে সেসব বিষয় বিবেচনা না করেই আগের সরকার তাদের সঙ্গে চুক্তি করে। সম্প্রতি, প্রবাসীরা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে গেলে ইএসকেএলের মালয় নিরাপত্তা প্রহরীরা বাংলাদেশিদের মারধর করেন এবং সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন, এমনকি প্রকাশ্যে তাদের হুমকি দেন। এ ঘটনার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এরপরই বাংলাদেশ দূতাবাস বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে এবং এক চিঠির মাধ্যমে ইএসকেএলকে নোটিশ দেয়।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ভিডিও কলের মাধ্যমে এই কোম্পানির সঙ্গে দূতাবাসের কার্যক্রম উদ্বোধন করেছিলেন। তবে এর পর থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ই-পাসপোর্ট ও ভিসা পরিষেবা নিতে গিয়ে নানা ভোগান্তির শিকার হন।
চলতি বছরের মাত্র এক বছর দুই মাসের মধ্যে, ইএসকেএলের বিরুদ্ধে উঠা নানা অভিযোগ ও ভোগান্তির পর, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চুক্তির ধারা ৮(বি) এর অধীনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক কার্যক্রমকে আরও সুশৃঙ্খল করতে সাহায্য করবে।
এই চিঠিটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যেমন ঢাকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর-সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, ইএসকেএলকে তিন মাসের মধ্যে চুক্তির সমস্ত প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে শেষ করে সবকিছু বুঝিয়ে দিতে হবে।
এভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের প্রবাসীদের জন্য ই-পাসপোর্ট ও ভিসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইএইচ