নিজের নাম পাল্টিয়ে বগুড়ার চানাচুর ব্যবসায়ী থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার হিরো হন হিরো আলম। আসল নাম আশরাফুল আলম। নানাভাবে শিরোনামে থাকাই তার মূল লক্ষ্য!
কখনো সংসার ভেঙ্গে জেলে যাওয়ার শিরােনাম আবার কখনও ধার করা টাকা মেরে খাওয়ার শিরোনাম। তবে এবার বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন কোটিপতির বনে হিরো আলম। ব্যাংকে টাকা ৩০ হাজার। এমন ভুলভাল শিরোনামে মূল ধান্দা গণমাধ্যমের ভিউ বাড়ানোর।
বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা আর সমালোচনা থেকে যে ভিডিও পান তিনি সেটি নিজের (বঙ্গবিডির এমসিএনে) যুক্ত করে মাসিক শতকরা ৭০% হারে ৩০ হাজার ইনকাম হয় তার। বর্তমানে ফেসবুক পেজে সমস্যা থাকার কারণে কোন ইনকাম নেই তার। আসলে হিরো আলমের মূল ইনকাম যাত্রাপালায়। তার যে সাদা গাড়ীটা সেটিও রংপুরের এক ব্যবসায়ীর থেকে ধার করা! তিনি মূলত চলে যাওয়া বউকে দেখানোর জন্য এসব করেন।
এমনকি জেলায় জেলায় মেয়েদেরকে নিয়ে যাত্রাপালায় ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে শোগুলি করে থাকে। তবে ইন্ডিয়ায় শো করেন মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে। শুধু তাই নয় দেশ ও বিদেশে থাকা প্রবাসীদের থেকে নানান বুদ্ধিতে আর নিজের বাড়ী নির্মাণ করার জন্য টাকা ধার নেন তিনি। এছাড়াও নামমাত্র সিনেমা বানানোর জন্য টাকাও ধার নিয়েছেন একাধিক প্রযোজকের থেকে। যা আজও দিবে দিচ্ছে বলে ঘুরচ্ছেন অনেকে।
এমন কথার অভিযোগে সূত্রে এক ইউটিউব ব্যবসায়ী জানান, `গেল বছর ডিপজলের বাড়ীতে তিনটি শুটিং করতে যাওয়ার আগে অনেকের থেকে ৬ লক্ষ টাকা ধার নেন। অন্যান্য জয়গায় থেকে আরও টাকা নেন তিনি। আজকাল আর পড়শু করতে করতে টাকা দিচ্ছে না আলম। শুটিংয়ে ফেঁসে যাওয়ায় এক সাংবাদিকের থেকে ৫০ হাজার টাকার ধার করার কথা শোনা যায়। এ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলাও হয়েছে তার নামে।`
তিনি আরও বলেন, `তার বউকে গহনা আর অলংকারের বিষয়গুলি মিথ্যা। তার এসব তালবাহানা চরিত্রে নিজের দ্বিতীয় বউ তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেন। সংসারে বাবা-মা আর সন্তানদের থাকতে হয় অনাহারে। তার মূলত নারী নেশা রয়েছে। নিজের অফিসে নানা রকমের মেয়ে নিয়ে এসেও ইয়াবাসহ নানা ধরণের নেশার কথাও শোনা যায় তার নামে। ও মূলত অনেক মেয়েদেরকে অফিসে রেখে বিভিন্ন জায়গাও পাঠিয়ে টাকা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার নামে। এককথায় বর্তমানে তার বাটপারিই মূল পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার নামে কেউ কোন অভিযোগ করলেও তাকে পুলিশি মামলা আর ভাইরালের ভয় দেখিয়ে অসংখ্য মানুষের টাকাও আত্মসাৎ করতে দেখা গেছে।
এরআগে বাংলাদেশের বগুড়া-৪(কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। সেই মনোনয়ন বাতিল করে দেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক সইফুল ইসলাম। কারণ তাঁর জমা দেওয়া তথ্যে নাকি রয়েছে বিস্তর গরমিল আর এলাকায় জনপ্রিয়তাসহ তার কোন ভোট নেই। এমনকি এলাকার জনগণ জানিয়েছেন আলম আর কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেও পারবে না।
কিন্তু চার বছরের ব্যবধানে বদলে গিয়েছে সব কিছু। ৯ শতক জমি কিনে বানিয়েছেন বাড়ি। এখন তাঁর কৃষি জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ শতক। স্ত্রীর সোনার গয়নায় পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ ভরি। ব্যাংকে রয়েছে প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা। এসব তথ্য মূলত মিথ্যা ভিত্তিহীন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর হলফনামায় এই তথ্যই উল্লেখ করেছিলেন হিরো আলম।