চলচ্চিত্রের সমিতিগুলোর সিদ্ধান্ত উৎসব বাদ দিয়ে এবং কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে বছরে ১০টি করে হিন্দি ছবি এদেশে আনা যাবে।
আমদানির পক্ষে এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন বর্ষীয়ান নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। তার কথা, যদি বাংলাদেশে হিন্দি ছবি আসে, দরকার পড়লে আমি সিনেমা হলের সামনে গিয়ে দাঁড়াবো। কারণ, আমি কোনোভাবেই চাই না ভাষা ও যুদ্ধের জন্য রক্ত দেয়া দেশে ভিনদেশের ছবি আসুক।
শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ ছবি বাংলাদেশে মুক্তির তোড়জোড় শুরু হলে এফডিসির সবগুলো সংগঠন মিটিং করে জটিলতা কাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীনের জন্য যুক্ত করেছি। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। তাহলে কেন এদেশে হিন্দি উর্দু ভাষার ছবি আসবে? এদেশে ভিনদেশী ভাষার ছবি মুক্তি দেয়া হবে না। যদি এদেশে ওইসব ভাষার ছবি মুক্তি পায় আমি হলের সামনে দাঁড়াবো।
‘তখন আমার বয়স ৫-৭ বছর হবে। ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই, নূরুল আমিনের কল্লা চাই’ বাঁশের মাথায় রক্ত মাখা জামা লাগিয়ে মিছিল হতে দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর কথায় আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই বিষয়টি বিবেচনায় নিবেন। আমি চাইবো, হিন্দি-উর্দু ছবি যেন না আসে।’
সিনেমা হল মালিকদের কথা, হিন্দি ছবি এলে দর্শক আবার ফিরবেন। এ কারণে তারা হল বাঁচাতে হিন্দি ছবি আমদানি পক্ষে কাজ করছেন। ঝন্টু সেই প্রসঙ্গে বলেন, নিজেদের ছবি দিয়ে যদি না চলে তাহলে দরকার নেই হল রাখার। ভেঙে মার্কেট গড়ুক। তারপরেও এদেশে ভিনদেশী ছবির দরকার নেই।
ঝন্টু মনে করেন, এদেশে হিন্দি ছবি আসা শুরু করলে বাংলা সংস্কৃতি ভুলে মানুষ হিন্দি চর্চা শুরু করবে। নজরুল কিংবা রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে আলোচনা হবে না।
আমদানির মাধ্যমে ২০২৩-২৪ সালে ২ বছরে ২০টি হিন্দি ছবি বাংলাদেশে আসবে; এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে চলচ্চিত্রের ১৯টি সংগঠন। হল মালিক সমিতি জানায়, ‘হিন্দি ছবি বাংলাদেশে মুক্তি পাবে কিনা’ এমন সিদ্ধান্তের জন্য রোববার এফডিসিতে ১৯টি সংগঠনের নেতারা মিটিংয়ে বসেছিলেন।
নায়ক আলমগীর সহ প্রতিটি সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এতে উপস্থিত ছিলেন। তারা সম্মতি জানিয়েছেন, শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশে হিন্দি ছবি আসবে।
প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলছেন, যেহেতু সবার সম্মতি চূড়ান্ত হয়েছে তাই শতভাগ নিশ্চিত শিগগিরই ‘পাঠান’ বাংলাদেশে মুক্তি পাবে।