সত্তর দশক থেকে বিংশ শতাব্দি পর্যন্ত চলচ্চিত্রের অবস্থান ছিল বেশ রমরমা। কিন্তু কিছু ভন্ড আর আর নামধারি পরিচালক অশ্লিলতার দায়ে মুখ থুবড়ে পরে এই অঙ্গণ। পরে নায়ক মান্না কিছু হাল ধরলেও এই নায়কের মৃত্যুর পর থেকে চলচ্চিত্রে শুরু হয় করুণ দশা। বর্তমান চলচ্চিত্র যতটুকু টিকে আছে সেটি শুধু বাংলাদেশের গণমাধ্যমের মাধ্যমে। দেশ যখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে গড়া দেশ রত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করছে। সেখানে গণমাধ্যমের নতুন মাধ্যম অনলাইনগুলির সার্পোট বেশ অনড়। সেই গণমাধ্যমগুলিও বিনোদন আর চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে রাতে-দিনে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন এই অঙ্গণকে।
কিন্তু সম্প্রতি সময়ে কিছু বালু খেকো ব্যবসায়ী আর অশিক্ষিত প্রযোজক এসে। টাকা আর মোহ মায়ায় যেন একটা ঘুর্ণিপাকে রেখেছেন কিছু পরিচালকদের। তার থেকেও চলচ্চিত্রের ভুল ভাল আর লস্করি কায়দায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অনেকেই। গড়েছেন নিজের নামে অবৈধ সম্পত্তি গাড়ী বাড়ী। কিন্তু সেই প্রযোজকেরও ১০০ এর মধ্যে ৯৯টি সিনেমায় রয়েছে ফ্লপের তালিকায়!
দেশের বাইরে যখন চলচ্চিত্রের হাজারশত কোটি টাকার রমরমা ব্যবসা তখন তাদের নকল স্কীপ্ট থেকে শুরু করে বাজে নির্মাণ কৌশলে মুখ থুবড়ে পড়েছে এই চলচ্চিত্র অঙ্গণ। শুরু হয়েছে নানান জনের সাথে রেষারেষি। তবে চলচ্চিত্র অঙ্গণের অনেক সংগঠন গণমাধ্যমের সাথে ভাল সখ্যতা রাখলেও গত দুই বছর থেকে এই সমিতি খেপেছেন গণমাধ্যমের উপর। গেল বছর সমিতির পিকনিকে গণমাধ্যমকে কোন কাজে লাগবে না জানিয়েও নিজেরাই শেষ করেছিলেন পিকনিক। তাকে কিছু গণমাধ্যমের খোঁচানিতে এবার ৩০% বাড়িয়েছেন দাওয়াত সংখ্যা। তাতেও সিনিয়র আর জুনিয়র আর ছোট বড় গণমাধ্যমে বাধা-বিপত্তি দেখা গেছে তাতে। অথচ চলচ্চিত্রের এই দুঃসময়ে অবদান আছে সবারই। তাহলে ছোট আর বড় নিয়ে এই অঙ্গণে এতো রেষারেষি কেন?
এছাড়াও এফডিসিতে বেশ কিছু গণমাধ্যমের রেষারেয়িতেও পরিচালক সমিতির পিকনিকে দাওয়াত পায়নি ৭০% বিনোদন সাংবাদিক। এ নিয়ে গোপনে অনেকের ক্ষোপ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। যারা কিনা দু-চার লাইনও লিখার ক্ষমতা রাখেনা। তাদেরও বড় গণমাধ্যম সাজিয়ে নিজেদের আধিপত্তের দৌড়ে সামনে দেখা গেছে। অথচ ডিএফপিতে এক থেকে দশ পর্যন্ত সরকারি বিজ্ঞাপন পান সমান। তাহলে কেন অন্য গণমাধ্যমকে ছোট চোখে দেখা হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আর্কষণ করেছে বেশ কিছু গণমাধ্যম কর্মী। তাতে করে চলচ্চিত্রের লাভের চেয়ে ক্ষতি হবে বলে ধারণা করছেন অনেকে। এক পক্ষকে হাতে রাখতে এবারের পিকনিকে দাওয়াত দিলেও ১৯ সংগঠনের বিদেশি চলচ্চিত্রের আনা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধেই প্রযোজক ও অভিনেতা ডিপজলের একটি বক্তব্যে পুরো জল ঢেলে দিয়েছেন। তাতেও তাদের টনক নড়েনি।
অন্যদিকে নিজের ক্ষোপ প্রকাশ করে এদিকে পরিচালক খিজির হায়াৎ খান নামে এক পরিচালককে ভাষার মাসে বিদেশি চলচ্চিত্রের নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করতে দেখা গেছে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া একটি বার্তাও দিয়েছেন এ পরিচালক। তিনি লিখেছেন, ‘ সিনেমাটাইতো বানাতে চেয়েছিলাম এই দেশে। আমার বাকি পরিচালক ভাইয়েরা যখন পিকনিক নিয়ে ব্যস্ত আমরা তখন রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করি, নিজের দেশের সিনেমা বাঁচাতে মাত্র কয়েকজন দাঁড়িয়ে থাকি। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’ এছাড়াও তাদের একক ডিশিসনের পিকনিকে অনেকেও তাতে যোগদানও করেনি বলেও অনেকেই দাবি করেছেন।
এক বক্তব্যে পরিচালক এফ আই মানিক বলেছিলেন, ‘আমার নিজের প্রযোজনায় এক ছবিতে বাংলাদেশের সুপাস্টার শাকিব খানসহ চলচ্চিত্রের বড় বড় আর্টিষ্ট নিয়ে কাজ শুরু করার আগে সিনেমার মহরতে শুধু একজন গণমাধ্যম কর্মীকে ভুলে দাওয়া না দিবার কারণে পুরো ৪ কোটি টাকার সিনেমা ফ্লপ খেয়ে আজ আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। অথচ এক সময় আমার মতো এতো হিট সিনেমার আর হিট গানের ধারের কাছে কোন পরিচালক ছিল না। তাই প্রত্যেক গণমাধ্যমকে সমান অধিকার দিতে হবে। বর্তমানে গণমাধ্যমের মধ্যে রেষারেষির দায় দিয়েছেন আলোচিত এই পরিচালককে।
নাম প্রকাশে এক সিনিয়র গণমাধ্যম কর্মী জানিয়েন, ‘আমি চলচ্চিত্র বিট করি। চলচ্চিত্রের নানান অসঙ্গতি তুলে ধরার চেষ্টা করি। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে রাতে দিনে পরিশ্রম করি। অথচ আমার অফিসে আমার জুনিয়র আর সিনিয়রকে দাওয়াত দিয়েছেন। আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। অন্যদিকে অনেক সিনিয়রদের তোয়াক্কা না করেই নিজেদের ক্ষমতা দেখিয়েছেন। অথচ বর্তমান চলচ্চিত্র সেন্সর থেকে শুরু করে ছবি হিট দেওয়া পর্যন্ত এই সমিতির কোন অবদানই চোখে পড়েনি। এমনকি তাদের এতো যোগ্যতা কম যে তাদের সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র পর্যন্ত দিতে দেখা যায়নি। যাও পেয়েছেন সেটিও মূলধারার পরিচালকরা। এক কথায় তারা আসলে মানষিক চরিত্র ক্যান্সারের রোগের মতো একেবারে কোমায় রয়েছে।
এছাড়াও কিছু পরিচালক রাতে দিনে কিছু মূর্খ প্রযোজকদের জিম্মি করে রাতে দিনে মদের অনুষ্ঠান আয়োজন করে চলচ্চিত্রের চেয়ে নিজেদের চামচামিতে ব্যস্ত সময়ও পার করতে দেখা গেছে। তাতে করে চলচ্চিত্রের সুদিন তো ফেরা দুরের কথা। সিনেমা হলের ছাড়পোকা তারাবার ক্ষমতা পর্যন্ত নাই বলেও অনেকেই ধারানা করেছেন।
এরআগে এক পরিচালক সিনেমা নিয়ে ভাল মন্দের লিখার বিরুদ্ধে সাইবার আইনের কথা জানিয়েও ট্রোলের স্বীকার হয়েছেন। যদিও তার নামেও একাধিক নায়িকার সাথে শ্লীলতাহানি ও অর্থ কেলেঙ্কারি ঘটনাসহ এক উঠতি নায়িকার সাথে গোপন প্রেমের সম্পর্ক ঘটনাও চাউর হয়েছে!
অন্যদিকে আরেক পরিচালকের নামেও এক সময়ের নিজেদের এলাকার এক পরিচালকের ক্ষমতা কাজে লাগিয়েও এক সমালোচিত জনপ্রিয় নায়িকার সাথে গোপন প্রেম, বিয়ে, টাকা আত্মসাৎসহ একাধিক নারীদের নায়িকা বানানো নামে দেহ ব্যবসার লিপ্তের কথাও শোনা গেছে!!
কেউ কারও ভাল দেখতে না পারা, পিছনে বদনাম করা, কুটক্তিসহ এই রকম রেষারেষি দিনের পর দিন চলতে থাকলে এই অঙ্গণ আরও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলেও বিভিন্ন চা আড্ডাতে হাস্যরসকভাবে ট্রল চোখে পড়েছে।