কেউ কেউ বলেছেন, অভিনয় ছেড়ে অনেক দূরের বাসিন্দা হয়ে গেছেন আনিসুর রহমান মিলন। কেউ কেউ বলেছেন, অভিনয় হয়তো ছেড়েই দিয়েছেন। কিন্তু আনিসুর রহমান মিলন আবারও সরব হয়েছেন নিজের একাধিক কাজ নিয়ে। মুগ্ধ করেছেন তার দর্শকদের। সম্প্রতি খুব কাছাকাছি সময়ে দুটি দারুণ চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে, যেখানে নিজের জাত চিনিয়েছেন আনিসুর রহমান মিলন। এর একটি আসিফ আকবর পরিচালিত দেশের সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি ‘এমআর ৯’, আরেকটি হূদি হকের পরিচালনায় ‘১৯৭১ সেইসব দিন’।
দুটি চলচ্চিত্রেই খুব অল্প সময়ের পর্দা উপস্থিতি থাকলেও মিলনের চরিত্রগুলো নিয়ে প্রশংসার চর্চা হচ্ছে। মিলন বলেন, ‘ভালো স্ক্রিপ্ট ও প্রডাকশনে সবাই কাজ করতে চায়। তবে আমি একটি চলচ্চিত্রে যতটুকুই সুযোগ পাই, তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। নিজের পেশার সঙ্গে সৎ থাকার চেষ্টা করেছি সব সময়।
সমপ্রতি ‘ফ্লাশ ইট’ নামের একটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, যেখানে একেকজন একেক দেশের। তারা কেউ থিয়েটার চর্চা করেন, কেউ টেলিভিশন নাটক, কেউবা সিনেমা ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেন। বাংলাদেশ, ভারত, কলম্বিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এই চার দেশের শিল্পীরা এক সিনেমায় ক্যামেরায় বন্দি হলেন। এ সিনেমার শুটিং হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত মে মাসের মাঝামাঝি ছবিটির শুটিং শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেটিকাট ও পেনসিলভানিয়ার বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির শুটিং হয়েছে। বিয়ের পরই লস এঞ্জেলেসে নিবাস গড়েন মিলন। কারণ তার স্ত্রী সেখানেই বসবাস করতেন। অতঃপর দুরারোগ্য ক্যানসারে আনিসুর রহমান মিলনের স্ত্রীবিয়োগের পর খুব স্বাভাবিকভাবে ব্যক্তিজীবনে মুষড়ে পড়েন তিনি।
মিলন বলেন, ‘এখন আমার সন্তানের জন্যই বেঁচে থাকা।’ তবে নিজেকে সামাল দিয়ে নতুন করেই অভিনয়ের ভেতরেই জীবনের আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন। সদস্য হয়েছেন হলিউড আর্টিস্ট গিল্ডের মতো বিখ্যাত সংগঠনের সঙ্গে, যা গর্বিত করেছে বাংলাদেশের অভিনয় সমাজকে। তার কথায়, ‘আমাকে আমেরিকায় আত্মপরিচয় ভুলে অন্য কোনো পেশায় জড়াতে হয়নি। সেটিই সবচেয়ে আনন্দের। হলিউডের মেইনস্ট্রিম বেশকিছু প্রডাকশনে নিয়মিত কাজ করছি। নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পাচ্ছি।’ ‘ফ্লাশ ইট’ পরিচালক রনি ভৌমিক ২০২১ সালে ‘মৃধা বনাম মৃধা’ পরিচালনা করে প্রশংসিত হন। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন।
এর বাইরে বাংলাদেশে একটি চলচ্চিত্রের কাজ করছেন তিনি। নিজের ক্যারিয়ারে এখন যেহেতু হলিউডের বিভিন্ন ধারার ছবি ও সিরিজে কাজ করছেন বা করবেন, তাই ৬ মাস দেশে ৬ মাস আমেরিকায় থেকেই কাজ করতে চান। সেক্ষেত্রে দেশের কোনো ভালো প্রডাকশনে যদি সময় নিয়ে মিলনকে নক করা হয়, তবে সেখানে চেষ্টা করবেন দেশীয় প্রডাকশনে যুক্ত হওয়ার।
তবে মিলন প্রায় এক বছর ধরে তার নিজস্ব পেজে কিছু মোটিভেশনাল জীবনঘনিষ্ঠ কথা দিয়ে মুগ্ধ করে রাখছেন তার দর্শকদের। মিলন বলেন, ‘আমি এগুলো যে হুট করে করি তা না। প্রতিদিন সকালে নিজের ভাবনাগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার এই রিলসগুলো দর্শকদের এত ভালো লাগবে প্রত্যাশা করিনি।’
উল্লেখ্য, বাংলা চলচ্চিত্রে বেশ কিছু সফল চলচ্চিত্র রয়েছে মিলনের ক্যারিয়ারে। বাণিজ্যিক ঘরানার চলচ্চিত্রে আনিসুর রহমান মিলন একটি নির্ভরতার নাম ছিল এক সময় ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই ইমেজটা নিয়েই দর্শকের কাছে নিয়মিত এখন পাওয়া যাবে তাকে। কারণ, তার আগামী সময়ে প্রায় পরপর বেশকিছু ছবি মুক্তি পাবে।