মাত্র বছর কয়েক আগেও গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসব ছিল খুবই সাধারণ ঘটনা। কিন্তু সময়ের বিবর্তন ও অস্ত্রোপচারে শিশু জন্মদানের প্রবণতায় অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছিল। সমাজের অভিজাত শ্রেণীর মানুষেরও প্রসববেদনা ভীতির কারণে আগ্রহ অস্ত্রোপচারের প্রতি। আর এমন প্রবণতাকে পুঁজি করে দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো যখন ঝুঁকছে সিজারে ঠিক তখন প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ টি নরমাল ডেলিভারি করাচ্ছেন ডাক্তার নাফিসা আনোয়ার মারিয়ানা।
এতে ব্যাপক সাড়াও ফেলেছেন তিনি। এইতো গত বছরের ডিসেম্বরের কথা,
নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামমের স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। প্রথম থেকেই স্বাভাবিক সন্তান প্রসবে আগ্রহী ছিলেন তার তিনি এবং তার স্ত্রী। কিন্তু কোথাও আস্থা পাচ্ছিলেন না আমিনুল। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত হওয়া ডা. নাফিসার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়। গাড়ি ভাড়া করে এত দূর থেকে এলিট হাসপাতালে স্ত্রীকে নিয়ে আসেন তিনি। সেখানেই ডা. নাফিসার নিবিড় পর্যবেক্ষণে নিরাপদভাবে সন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী।
জানা যায়, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাইনী ও প্রসূতি বিভাগে এম এস করেছেন নাফিসা। বর্তমানে শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনী বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়াও এলিট কেয়ার হাসপাতাল গাজীপুর, মডার্ন ডক্টরস হসপিটাল সখিপুর এ প্র্যাক্টিস করেন।
গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নাফিসা আনোয়ার মারিয়ানা বলেন, সঠিক চিকিৎসা, তত্ত্বাবধান, বিশ্বাস ও আস্থার মাধ্যমে অধিকাংশ প্রসূতি স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দিতে পারেন। বিষয়টি প্রসূতি ও তাদের পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করাতে হয় আমাদের। এছাড়া সিজারিয়ানের নানা কুফল রয়েছে তাও তাদের অবহিত করা হয়। এভাবেই সবাইকে নিরাপদ স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের দিকে এগিয়ে আনতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের মূল স্লোগানই হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশনকে না বলুন, স্বাভাবিক প্রসবকে উৎসাহিত করুন।