দেশে প্রথমবারের মত রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি রোবোটের মাধ্যমে হার্টে রিং (স্টেন্ট) পরানোর যাত্রা শুরু হচ্ছে। আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এই চিকিৎসা পদ্ধতি চালু হতে পারে বলে জানা গেছে। এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু হলে কম সময়ে ও সাশ্রয়ী মূল্যে রোগীরা চিকিৎসা পাবেন বলে আশা চিকিৎসকদের।
সম্প্রতি দেশের প্রথম কোনো চিকিৎসক হিসেবে রোবটিক এনজিওপ্লাস্টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার। ভারত থেকে হাতে কলমে এই প্রশিক্ষণ নেন তিনি। ইতিমধ্যে একটি টিমও গঠন করা হয়েছে।
হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট বলছে, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিশ্বের বহু দেশে এখন পর্যন্ত ১৬০টি রোবটিক এনজিওপ্লাস্টি সেন্টার রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে ছয়টি। তবে বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি কোনো পর্যায়ে এখনো এই চিকিৎসা পদ্ধতি চালু হয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীন নতুন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে হওয়ার কথা রয়েছে, তবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন হলেও এখনো সেবা কার্যক্রম শুরু হয়নি।
জানতে চাইলে হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার বলেন, রোবটিক এনজিওপ্লাস্টি যেকোনো দেশের জন্য যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টরা অফিস, বাড়ি এমনকি বিদেশ থেকেও রোবোটের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে হার্টে রিং পরাতে পারবেন। তাই কার্ডিওলজিস্ট ক্যাথল্যাবে না থাকলেও রোগীরা রিং পরানোর এই সেবা নিতে পারবেন।
একই সঙ্গে ক্যাথল্যাবে যেসব চিকিৎসক কাজ করেন, অধিক মাত্রার রেডিয়েশনের কারণে অনেক সময় তাঁরা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাদের আলাদা পোশাক পর্যন্ত পরতে হয়। কিন্তু এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আলাদা পোশাকের প্রয়োজন হবে না।
প্রদীপ কুমার কর্মকার বলেন, হার্টের রিং পরানোর বিষয়টি একটি জটিল সূক্ষ্ম কাজ। হাত দিয়ে করার চেয়ে রোবট দিয়ে করতে পারলে রিং নির্বাচন ও অবস্থান অত্যন্ত নির্ভুলভাবে বসানো যায়। রোগী থেকে শুরু করে চিকিৎসক এবং দেশের জন্য এই চিকিৎসা নতুন দিনের সূচনা করবে। এসব চিকিৎসায় বেশির ভাগ রোগী ভারত ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে যায়। এটি চালু করতে পারলে বহু রোগীকে কম সময়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। যেহেতু আমাদের অবকাঠামো ও যন্ত্রও আছে। তাই আগামী বছরের শুরুতেই এই চিকিৎসা পদ্ধতি চালুর আশা করা হচ্ছে।
ইএফ