বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১০ থেকে ১২ হাজারের মত। কিন্তু এই জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্য সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। সামাজিকভাবে নিগৃহীত হওয়া ও সাধারণ মানুষ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের প্রতি হীনমন্যতা প্রদর্শনে এই জনগোষ্ঠী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসেন না বলেও আলোচনায় উঠে আসে।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশে এইচআইভি এইডস এর বর্তমান অবস্থা নিয়ে বন্ধু স্যোসাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি আয়োজিত এক এক গোল টেবিল বৈঠকে এসব তথ্য উঠে আসে।
বন্ধু স্যোসাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নিজস্ব তথ্যে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর মাঝে ৯৬ জন এইচআইভি এইডস এ আক্রান্ত বলে জানানো হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে এই সংগঠনটি হিজড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস এবং এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের পরিচালক ডা. শাহ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, আমরা যখন ছোট ছিলাম দেখতাম তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠী কতটুকু নিগৃহীত ছিল তা এখন বুঝতে পারি। তারা অসুস্থতায় ও হাসপাতালে যেতে চায়না। এর বড় কারন সেখানকার সাধারণ মানুষ ও অন্যভাবে দেখে। আর তারাও স্বাচ্ছন্দবোধ করেনা।
তিনি বলেন, তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীরা প্রথম হোচট খায় পরিবারে। এমন ও শোনা যায় এটি বাবা মায়ের পাপের কারনে হয়েছে। ১০ থেকে ১২ বছর বয়সে আচরনগত পরিবর্তনের কারনে সমাজে, বন্ধুদের মাঝে তাদের সম্পর্কের পরিবর্তন সৃষ্টি হয়। এসময় নানা ভাবে নিগৃহের শিকার হওয়ার কারনে তারা একটা সময় সমাজ থেকে দূরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীরা যাতে পরিবারে থেকেই বড় হতে পারে। ভাই বোন থেকে কিংবা সমাজের মানুষ কিংবা সহপাঠীদের মাধ্যমে যাতে তারা নিগৃহীত না হয় সেই ব্যবস্থা নেয়া ও প্রয়োজনে আইন করা যায় কিনা ভেবে দেখা উচিৎ।
ইউএন এইডসের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. সায়মা খান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ইউএনএইডস বিশ্বব্যাপি ৯৫+৯৫+৯৫ এই ফর্মুলা নিয়ে কাজ করছে। এই ফর্মুলা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ২০২১ সালে ইউএনএইডস নতুন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, দেশের মোট এইচআইভি আক্রান্তের ৯৫ শতাংশ রোগী শনাক্ত করা হবে। শনাক্ত রোগীর ৯৫ শতাংশকে চিকিৎসার আওতায় আনা হবে।
আর ৯৫ শতাংশ রোগটিকে কমিয়ে আনতে হেব। বাংলাদেশ এইখানে ৬৭ শতাংশ রোগীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। শনাক্ত রোগীর ৭৭ শতাংশকে চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে এবং রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে ৯০ শতাংশ সক্ষম হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস এবং এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. আনোয়ারুল আমিন আকন্দ। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বন্ধু স্যোসাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এইচআইভি এইডস এর দলনেতা নারায়ন চন্দ্র শীল, স্বাস্থ্য ও স্ট্রাটেজিক পার্টানাশিফ পরিচালক মো. সাখাওয়াত আলম, নির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমেদ ও ডেপুটি ম্যানেজার রুহুল রবিন খান।
টিএইচ