ঈদের ছুটিতেও সেবা দিতে প্রস্তুত সরকারি হাসপাতাল 

আমার সংবাদ ডেস্ক: প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম
ঈদের ছুটিতেও সেবা দিতে প্রস্তুত সরকারি হাসপাতাল 

ঈদে দীর্ঘ ৯ দিনের ছুটিতে দেশ। ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি চলবে সব সরকারি ও অধিকাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। লম্বা এই ছুটিতে কীভাবে চলবে হাসপাতালগুলো? কেমন হবে সেবা কার্যক্রম? ঈদের ছুটিতে জরুরি রোগীদের নিয়ে কোথায় যাবেন, কোথায় গেলে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা পাবেন, এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই দুশ্চিন্তা থাকতে পারে। তবে ঈদের ছুটিতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালগুলো সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।

ঈদ ঘিরে ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। হাসপাতালগুলোতেও রোগীর জটলাও কিছুটা কম। তবে জরুরি বিভাগের অনেক রোগী ও তাদের স্বজনদের ঈদ করতে হবে হাসপাতালেই। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ এই ছুটিতেও তারা হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল রাখছেন। বিশেষ করে জরুরি বিভাগ, ওটি ও ইনডোরে নিয়মিত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মাচারীরা সেবা দেবেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসা একটি জরুরি সেবা, এটা বন্ধ হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। ঈদে ছুটির দিনগুলোতেও হাসপাতালের কার্যক্রম চলমান থাকবে। সরকারি হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের সেবা ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে। তবে ঈদের দিন, ঈদের আগের এবং পরের দিন শুধুমাত্র আউটডোরে রোগী দেখার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছুটির দিনগুলোতে চিকিৎসক এবং নার্স রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ঈদের দিন রোগীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও করা হবে।

ঈদের ছুটিতে হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। ঈদের ছুটিতেও জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। তিনদিন আউটডোর সেবা বন্ধ থাকবে। চিকিৎসকরা রোস্টার অনুযায়ী ডিউটি করবেন। এবার যদিও সরকারি ছুটি তিনদিন কিন্তু চিকিৎসকদের আসলে ছুটি নাই।

ঈদের দিনে রোগীর জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সকালে রোগীদের সেমাই ফিরনি খেতে দেওয়া হয়, এছাড়াও দুপুরে পোলাও খাসির মাংস এবং ডিম দেওয়া হয়।

চিকিৎসাসেবায় মানুষের সবচেয়ে বেশি ভরসার জায়গা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ওই হাসপাতালে দৈনিক এক হাজার জনবল কর্মরত থাকবেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, বেশিরভাগ জরুরি বিভাগের রোগী আসে। আমরা সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছি। ছুটির মধ্যে প্রতিদিন ১৫০ জন ডাক্তার, ৫০০ নার্স ও অন্য কর্মচারীরা মিলে এক হাজারের বেশি জনবল নিয়োজিত থাকবে। আমরা প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহও নিশ্চিত করেছি।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান বলেন, ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন এবং পরের দিন আমাদের আউটডোর বন্ধ থাকবে। এর আগে পরে আউটডোরে রোগীরা চিকিৎসা পাবেন, সেই ব্যবস্থা করা আছে। এছাড়াও আমাদের হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগ ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকবে। অমুসলিম ডাক্তারদের দিয়ে পাঁচ দিনের রোস্টার করা আছে।

তিনি বলেন, জরুরি অপারেশন থিয়েটার, সার্জারি এবং গাইনি বিভাগের টিম রেডি আছে, চালু থাকবে। প্রত্যেকটা ওয়ার্ডের রোস্টার রেডি করা আছে, সেই অনুযায়ী ডিউটিতে থাকবে। আমাদের হাসপাতালের সব স্তরে চিকিৎসক আছে। এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণি, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং নার্স ডিউটিতে উপস্থিত থাকবে। ফলে, আশা করি কোনো অসুবিধা হবে না।

ঈদ উপলক্ষে বিশেষ কোনো খাবারের ব্যবস্থা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের দিন বরাবরের মতোই বিশেষ খাবার বরাদ্দ করা হবে।

ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এলাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ডের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল, কিডনি হাসপাতাল, হৃদরোগ হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতাল সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে জরুরি ও ইনডোর সার্ভিস চালু থাকবে। ছুটির দিনেও বিশেষ ব্যবস্থায় সেবা কার্যক্রম চালু রাখবে হাসপাতালগুলো।

বিআরইউ