ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিরে অভিযোগে শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভকারীদের দ্বারা অবরুদ্ধ ছিল প্রেসিডেন্ট কার্যালয়। সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে বিতাড়িত করার পর সোমবার (২৫ জুলাই) থেকে পুনরায় কার্যালয়টি চালু করা হচ্ছে।
দ্বীপরাষ্ট্রটিতে অর্থনৈতিক সংকটের জেরে ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা চলতি মাসের শুরুতে ঔপনিবেশিক যুগের ভবনটি দখল করে নেয়। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়াকে সরিয়ে নেয় দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। পরে তিনি প্রথমে প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপ, এরপর সিঙ্গাপুরে চলে যান এবং সেখান থেকেই পদত্যাগ করেন।
গোতাবায়া রাজাপাকসের উত্তরসূরী রনিল বিক্রমাসিংহের নির্দেশে শুক্রবার মধ্যরাতের পরপরই লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রসহ অভিযান শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে বের করে দেন তারা। এসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায় আন্দোলনকারীদের। এতে আহত হন ৪৮ জন। অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় আরও অনেককে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা রোববার এএফপিকে জানান, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বিক্ষোভকারীদের দ্বারা ক্ষতির প্রমাণ সংগ্রহ করতে অফিসে গিয়েছিলেন। সোমবার থেকে অফিসটি আবার খোলার জন্য প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
পশ্চিমা সরকার, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংস আচরণের জন্য বিক্রমাসিংহের নিন্দা করেছেন। কারণ তারা শুক্রবার বিকালের মধ্যে প্রেসিডেন্টের সরকারি কার্যালয় ছেড়ে যাওয়ার কথা বলেন।
পুলিশের মুখপাত্র নিহাল তালদুওয়া বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়ের কাছে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে পারতো।
বিক্রমাসিংহের শপথ নেওয়ার ২৪ ঘন্টারও কম সময় পরে এবং একটি নতুন মন্ত্রিসভা নিয়োগের ঠিক আগে সচিবালয় ভবন এবং এর আশেপাশের এলাকায় সামরিক অভিযান শুরু হয়েছিল।
২২ জুলাই দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন দীনেশ গুনাবর্ধনে। ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার একদিন পরই দিনেশ গুনাবর্ধনেকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
অর্থনৈতিক সংকটের জেরে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে শ্রীলঙ্কা। গত কয়েক মাস ধরে চলে বিক্ষোভ। অবশেষে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট পেয়েছে শ্রীলঙ্কার মানুষ। তবুও এখনো শঙ্কা কাটেনি সাধারণ মানুষের।
সূত্র: এএফপি, স্ট্রেইটস টাইমস