অবৈধ বাংলাদেশীদের জন্য সুখবর

স্পেনে সহজ হলো বৈধতার আইন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২, ০১:০৬ এএম
স্পেনে সহজ হলো বৈধতার আইন

বৈধ কাগজ না থাকা বিদেশিদের শ্রমবাজারে যুক্ত করা এবং বিদেশ থেকে কর্মী আনার নিয়ম শিথিল করেছে স্পেন৷ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত আইন পরিবর্তন করেছে দেশটি৷

পর্যটন, কৃষি শিল্পের মতো কর্মী সংকটে থাকা খাতগুলোর চাহিদা মেটাতে বিদ্যমান অভিবাসন আইন সংস্কার করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের দেশ স্পেন৷ এর ফলে চাকরিদাতারা সহজে বিদেশ থেকে কর্মী আনার অনুমতি পাবে৷ পাশাপাশি স্পেনে এখন বসবাস করছেন এমন অভিবাসীদের নিয়োগ দিতে আলাদা করে আর কাজের অনুমতির প্রয়োজন হবে না৷

দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের মতে, আগের প্রক্রিয়াটি ধীর আর প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় স্পেন সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল৷ মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিলটি পাসের পর দেশটির সামাজিক নিরাপত্তা ও অভিবাসনমন্ত্রী হোসে লুইস এসক্রিভা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই উদ্যোগের ফলে অভিবাসনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্চগুলো আমরা ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারবো৷‍‍`‍‍`

সহজে মিলবে কাজের অনুমতি

নতুন নিয়ম অনুযায়ী দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে দেশটিতে বসবাসরত বিদেশিরা এখন সাময়িক বসবাসের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন৷ এজন্য শর্ত হিসেবে কর্মী সংকট থাকা খাত সংশ্লিষ্ট কোনো প্রশিক্ষণে নিবন্ধন করতে হবে৷ এছাড়া যারা ছয়মাস ধরে কাগজবিহীনভাবে কাজ করেছেন, তারা প্রমাণ সাপেক্ষে বৈধভাবে কাজের অনুমতির আবেদন করতে পারবেন৷ সরকারের হিসাবে স্পেনে পাঁচ লাখ মানুষ আছেন, যারা এখন অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজে নিযুক্ত আছেন৷

বিদেশি শিক্ষার্থীরা দেশটিতে পড়াশোনা শেষ করার সাথে সাথেই কাজে যোগ দিতে পারবেন৷ আগের নিয়ম অনুযায়ী, তাদের তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না৷ এছাড়া পড়াশোনারত অবস্থায় তারা সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজের অনুমতি পাবেন৷

আইনটির কারণে কর্মী সংকট থাকা খাতগুলোর জন্য বিদেশিদের কাজ ও ভিসা পাওয়ার উপায়ও সহজ হবে৷

এসক্রিভা জানিয়েছেন, যেসব খাতে কর্মী চাহিদা রয়েছে তার একটি হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করবে তার মন্ত্রণালয়৷ এতে শ্রমবাজার সম্পর্কে পরিস্কার চিত্র পাওয়া যাবে৷

বেকারত্বের উচ্চহার সত্ত্বেও কর্মী সংকট

বর্তমানে স্পেনে বেকারত্বের হার ১৩ দশমিক ছয়-পাঁচ শতাংশ, যা ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ৷ তবে চাকরিদাতাদের তথ্য অনুযায়ী, পর্যটন, কৃষি, নির্মাণ ও পণ্য পরিবহণ খাতে কর্মী সংকটে ভুগছেন তারা৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের কাজের অনুমতি সত্ত্বেও চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না৷

কিছু নির্দিষ্ট খাতে কর্মী চাহিদা পূরণে মরক্কো, ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ার সঙ্গে অভিবাসন কর্মসূচী রয়েছে দেশটির৷

মরক্কো থেকে সমুদ্র পেরিয়ে প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ স্পেনে আসার চেষ্টা করেন৷ তাদের অনেকেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনানুষ্ঠানিক শ্রমখাতে কাজে নিযুক্ত হন৷ নতুন আইনের ফলে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে আশা করছে দেশটির সরকার৷ সাংবাদিক সম্মেলনে এসক্রেবা বলেন, ‘নিয়মসঙ্গত, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ অভিবাসনকে উৎসাহিত করাই’ আইন সংস্কারের উদ্দেশ্য৷

অভিবাসী বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস তিনটি প্রধান ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের নেতৃত্বে একটি যৌথ প্লাটফর্ম৷ প্লাটফর্মটিতে রয়েছে জার্মানির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে, ফ্রান্স মিডিয়া মোন্দ, এবং ইটালিয়ান সংবাদ সংস্থা আনসা৷ এই প্রকল্পের সহ-অর্থায়নে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

ইএফ