করোনা মহামারি কমে যাওয়ার পর আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাব্য যে হার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) নির্ধারণ করেছিল, বাস্তবে তা অনেক কম হওয়ায় একটি বড় বৈশ্বিক মন্দা শুরু হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভায় এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।
সভায় তিনি জানান, চলতি বছরের শুরুতে আইএমএফ আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, বাস্তব বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে তা এ পর্যন্ত তিন বার কমাতে হয়েছে।
ক্রিস্টালিনা জর্মিয়েভা মন্তব্য করেন, ভারতে টাকার দাম কমছে। সম্ভাব্য বৃদ্ধির হারও কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে এই পরিস্থিতি শুধু ভারতে নয়, সারা পৃথিবী জুড়ে। তবে পরিস্থিতি ভাল হওয়ার বদলে আরও খারাপের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন দেশ মহামারির প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার পর চলতি ২০২২ সালের শুরুতে আশা ছিল, আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার হবে অন্তত ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
কিন্তু গত কয়েক মাসের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এই লক্ষ্যমাত্রা তিনবার সংশোধন করা হয়েছে। এখন ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছরের শুরুতে প্রবৃদ্ধির হার থাকবে ২ দশমিক ৯ শতাংশ।
বিশ্ব অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে মন্দাভাব শুরু হয়েছে এবং দিন দিন তার ঝুঁকি বাড়ছে। একদিকে ডলারের মূল্য বাড়ছে, আবার অন্যদিকে জ্বালানি তেলের বাজারে ইতোমধ্যে মন্দা শুরু হয়ে গেছে। তেলের দাম কমতে থাকলেও ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেক দেশ তেল কিনতে পারছে না।
ফলে পৃথিবীজুড়ে অর্থনীতির চাকা ঠিকমতো সচল হচ্ছে না। যদি এই অবস্থা চলতে থাকে তাহলে আগামী দুই বছর বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ দেশের অর্থনীতির সংকোচন অব্যাহত থাকবে।
ফলে আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে বৈশ্বিক উৎপাদন প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের মতো কমে যাবে। এই ঘাটতি খুব দ্রুত পূরণ সম্ভব হবে না বলে মনে করছে আইএমএফ।
টিএইচ