আফগানিস্তানে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে তালেবান প্রশাসন। এ পদক্ষেপটির মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় আফগান নারীদের প্রবেশাধিকারকে আরও সীমিত করেছে তালেবান। দেশটিতে ইতিমধ্যে বেশির ভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মেয়ে শিক্ষার্থীরা বাদ পড়েছে।
মঙ্গলবার তালেবান প্রশাসন পরিচালিত উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
দেশটির উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জারি করেছে বলে ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন।
চিঠিতে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আফগানিস্তানের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অবিলম্বে নারী শিক্ষার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ঘোষণার পর জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেছেন, `তালেবানরা সব আফগানদের অধিকার, বিশেষ করে মানবাধিকার এবং নারী ও মেয়েদের মৌলিক স্বাধীনতাকে সম্মান না করা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে পারে না।`
জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড বলেছেন, `এ নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে দেশটিতে নারীদের অধিকার আরও কমিয়ে দেওয়া হলো এবং প্রতিটি নারী শিক্ষার্থীর জন্য এটা গভীর হতাশার বিষয়।`
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, `মঙ্গলবারের এ ঘোষণা স্পষ্টতই তালেবানদের আরেকটি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ।`
উল্লেখ্য, তিন মাস আগেই আফগানিস্তানজুড়ে হাজারো নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তখন নারী শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন বিষয়ের ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। বিশেষ করে পশুচিকিত্সা বিজ্ঞান, প্রকৌশল, অর্থনীতি, সাংবাদিকতার মতো বিষয় নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল তালেবান। গত বছর আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ক্ষমতা দখলের পর আফগান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারীদের জন্য পৃথক শ্রেণিকক্ষ ও প্রবেশপথ চালু করেছিল তালেবান। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের শুধু নারী শিক্ষক বা বয়স্ক পুরুষ শিক্ষক পড়াতে পারতেন।
এআই