ফ্রান্সে ৪৫৭ বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩, ০৮:১০ পিএম
ফ্রান্সে ৪৫৭ বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার

ফ্রান্সের প্র্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর  পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালে বৃহস্পতিবার ৪৫৭ জনকে  গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময়ে সংঘর্ষে  ৪৪১ জন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছে। 

শুক্রবার ফ্রান্সের সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম সি নিউজ চ্যানেলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশজুড়ে প্রচুর পরিমাণে বিক্ষোভমিছিল হয়েছে এবং সেসবের মধ্যে কিছু মিছিল সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। গ্রেপ্তার ও আহতের অধিকাংশ ঘটনায় ঘটেছে প্যারিসে।’

ফ্রান্সের পুলিশ অবশ্য আগেই সতর্ক করেছিল— জনবিক্ষোভের সুযোগে দেশের নৈরাজ্যবাদী দলগুলো তৎপর হয়ে উঠবে এবং সহিংসতা ছড়াবে।

সরকারি-আধাসরকারি-বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে পেনশনের বয়স বৃদ্ধি নিয়ে দেশটির সরকারের নেওয়া নতুন সিদ্ধান্তে গত প্রায় দু-সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে ফ্রান্সে। দেশটির প্রায় সব বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা সেই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।

গত দু’মাস ধরে ফ্রান্সে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে এই প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে জনমতও গঠিত হয়েছে। সরকারপন্থীদের দাবি— পেনশনের বয়সসীমা বাড়ালে তা দেশের সার্বিক কর্মসংস্থানে কোনো চাপ ফেলবে না এবং প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা শুরু হয়েছে— সেটি ঠেকাবে।

অন্যদিকে পার্লামেন্টের বিরোধী দলগুলো, কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন এবং জনসাধারণের একাংশ সরকারের এই প্রস্তাব নিয়ে একমত হতে পারেনি। গত দু’মাস এ নিয়ে পার্লামেন্টে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়েছে, একাধিক ধর্মঘটও হয়েছে দেশটিতে।

তবে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে গত ১৬ মার্চ, বৃহস্পতিবার পেনশনের বয়সসীমা বর্ধিতকরণের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পর। ওই দিন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বাধীন সরকার পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোট এড়িয়ে অবসরগ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার ঘোষণা দেয়।

তারপর থেকেই রাজধানী প্যারিসসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন নতুন আইন বাতিলের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।পুলিশ অবশ্য আগেই সতর্ক করেছিল যে— জনসাধারণের চলমান বিক্ষোভের মধ্যে দেশের সরকারবিরোধী নৈরাজ্যবাদী বিভিন্ন দলের অনুপ্রবেশ ঘটতে পরে এবং তারা ভাঙচুর ও হামলা চালাতে পারে।

বৃহস্পতিবার এ সম্পর্কে সি নিউজকে গেরাল্ড ডারমানিন বলেন, ‘সহিংস বিক্ষোভ হচ্ছে— কেবলমাত্র এই কারণে আমরা একটি আইন বাতিল করতে পারি না। যদি আমরা এমন করি, তার অর্থ দাঁড়াবে— এখানে কোনো রাষ্ট্র নেই।’

‘আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিপক্ষে নই, কিন্তু সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না,’ বলেন মন্ত্রী।
 

আরএস