পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। তাকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে এক আবেদনের শুনানিতে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ওই নির্দেশ দেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালত চত্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি বেআইনি। খবর বিবিসি ও ডন
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের বৈধতা নিয়ে এক আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেলে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি নেন।
এর আগে, শুনানির এক পর্যায়ে ইমরানকে আদালতে হাজির করার জন্য ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোকে (এনএবি ) নির্দেশ দেন আদালত।
শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালত আজ একটি সুনির্দিষ্ট আদেশ দেবে এবং আদালত বিষয়টিকে ‘খুবই গুরুত্ব’ দিচ্ছে। এরপর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় ইমরানকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে ইমরানের গ্রেপ্তারকে বেআইনি ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ সময় ইমরান খান বিচারকদের জানান, হাইকোর্ট থেকে আমাকে অপহরণ ও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরানকে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার করে এনএবি। পরে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন ইমরান খানের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে তার সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন ও দুই হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশিসহ শীর্ষ সাত নেতা রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, জনশৃঙ্খলা রক্ষা আইনে কুরেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পাঞ্জাব, খাইবার পাখতুনখাওয়া ও ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেয়াদের চার বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরান খান সেনাবাহিনীর সহায়তায় জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিনি সেনাবাহিনীর অন্যতম সোচ্চার সমালোচক হয়ে উঠেছেন।
২০২২ সালের নভেম্বরে একটি বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়ার সময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন ইমরান খান। এ হামলার জন্য গোয়েন্দা বাহিনীর শীর্ষ এক কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করেছেন তিনি। তবে সামরিক বাহিনী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এআরএস