ধীরে ধীরে মাটির নিচে দেবে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। একটি নতুন গবেষণায় পাওয়া গেছে, শহরটি দেবে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো লাখ লাখ ভবন নির্মাণ। এসব ভবনের চাপে অল্প অল্প করে নিচু হচ্ছে শহরটি।
উপকূল, নদী বা খালের তীরবর্তী স্থানে উচু ভবন নির্মাণের কারণে কিভাবে সেসব স্থানে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে সেটি বোঝাতেই এই গবেষণা করা হয়েছে। আর্থ’স ফিউচার নামক জার্নালে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষকরা হিসেব করে দেখেছেন নিউইয়র্কের পাঁচটি বিভাগে সব মিলিয়ে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৪টি ভবন রয়েছে। তারা দেখেছেন এই ভবনগুলোর ওজন ৭৬২ বিলিয়ন কেজি। যা মালভর্তি ১৯ লাখ বিমানের ওজনের সমান।
গবেষক দলটি সিমুলেটর পরীক্ষার তথ্য ও স্যাটেলাইটে প্রাপ্ত ভূপৃষ্ঠের তথ্য তুলনা করেছে। তাদের এ বিশ্লেষণে দেখা গেছে নিউইয়র্ক প্রতিবছর ১ থেকে ২ মিলিমিটার পর্যন্ত দেবে যাচ্ছে। অবশ্য শুধুমাত্র যে ভবনের কারণে শহরটি দেবে যাচ্ছে বিষয়টি এমনও নয়। তবে ২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ৪৮টি উপকূলীয় এলাকার মধ্যে ৪৪টিই দেবে যাচ্ছে।
নিউইয়র্ক শহর হলো এমন শহর, যেটির চারপাশের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এ উচ্চতা ৮ থেকে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। এখন ভবনের চাপে দেবে যাওয়ার বিষয়টি নিউইয়র্কের জন্য বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
এছাড়া মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু সমস্যার কারণে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত এবং ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের গবেষক ভূতত্ত্ববিদ টম পারসন বলেছেন, ‘সমুদ্র (সমুদ্রের পানি) ঢুকে পড়া থেকে আমরা দূরে আছি। কিন্তু আমরা কিছু বড় ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছি। অতিবৃষ্টির কারণে নিউইয়র্কের স্যান্ডি এবং ইডায় প্লাবনের সৃষ্টি হয়েছিল, আর শহরায়নের কিছু প্রভাবে পানি ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল।’ সূত্র: সিএনএন
এইচআর