ইসরায়েলে পৃথক দুটি ঘটনায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ মোট ছয় ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। দেশটিতে আরব সংখ্যালঘুদের ওপর ভয়ংকর প্রাণঘাতী হামলার সবশেষ ঘটনা এটি।
ইসরায়েলি পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) উত্তর ইসরায়েলের বাসমাত তাবুন শহরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে। তাদের মধ্যে দুজন নারী ও তিনজন পুরুষ।
এ ঘটনায় নিহতরা সম্পর্কে বাবা-মা ও তাদের তিন সন্তান ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে পর্যবেক্ষক সংগঠন আব্রাহাম ইনিশিয়েটিভস।
পুলিশ বলেছে, সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে তারা।
এর আগে, হাইফা শহরে আরেক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করে মুখোশধারী বন্দুকধারীরা। ওই ব্যক্তি কর্মস্থলে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হন।
একই দিনে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডগুলো কোনোভাবে সম্পর্কিত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ।
হাইফার যে এলাকায় প্রথম হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছিল, সেখানকার সব স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আব্রহাম ইনিশিয়েটিভসের হিসাবে, এ দুটি ঘটনা মিলিয়ে চলতি বছরে ইসরায়েলে অন্তত ১৮৮ ফিলিস্তিনি হত্যার শিকার হলেন।
ইসরায়েলের ৯৭ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশই ফিলিস্তিনি নাগরিক। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে তারা দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সরকারের অবহেলার শিকার।
ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে পুলিশি নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এর ফলে সেখানে অপরাধী ও মাদক কারবারিরা অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন জিভির গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন, ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অপরাধ কমাতে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ে না।
বরং এসব এলাকায় সহিংসতা-প্রাণহানি আরও বেড়েছে। এসব ঘটনায় দায়ের হওয়ার মামলাগুলোর মধ্যে ১০ শতাংশেরও কম সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছে আব্রাহাম ইনিশিয়েটিভস।
সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই জননিরাপত্তা মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হবে এবং অবিলম্বে আরব সমাজে অপরাধ মোকাবিলার পরিকল্পনা করতে হবে। এটি জরুরি অবস্থা।
সংগঠনটির পরিচালক থাবেত আবু রাসের অভিযোগ, পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের ইচ্ছা বা ক্ষমতা কোনোটাই নেই। মানুষ বাইরে যেতে ভয় পায়। পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক।
সূত্র: আল-জাজিরা
আরএস